আইন বোঝেন না, মামলা করতে ছোটেন কেন?‌

রক্তিম মিত্র

হ্যাঁ, এমনটাই হওয়ার ছিল।

হাইকোর্টের রায় নিয়ে খুব উল্লাস প্রকাশ করেছিলেন। যেন বিরাট এক যুদ্ধে জিতে গেছেন। আজ সেই হাইকোর্ট দরজা বন্ধ করে দিল। সাফ জানিয়ে দিল, নির্বাচনে আর হস্তক্ষেপ নয়।

সেদিন যাঁরা বিরাট যুদ্ধ জয় বলে দেখিয়েছিলেন, সেই মুখগুলো মনে পড়ছে।

জানাই ছিল, নির্বাচন কমিশন একদিন মনোনয়ন জমা দেওয়ার বাড়তি সময় দেবে। সেইদিন চূড়ান্ত সন্ত্রাস চলবে। আর লাগাতার গুন্ডামি আর সন্ত্রাসের জন্য ‘‌অনুপ্রেরণা’‌র অভাব নেই।

high court

ঠিক সেটাই হল। রাজ্যের প্রতিটি জেলায় এই হামলা। ব্লক অফিস তো বটেই। এসডিও অফিসও রেহাই পেল না। খোদ এসডিও অফিসের সামনেও রণক্ষেত্র। অবাধে যাকে তাকে পেটানো হল। রেহাই পেলেন না বিধায়ক, প্রাক্তন সাংসদ। অন্তত কুড়িজন সাংবাদিকও আক্রান্ত। পুলিশ, প্রশাসন যথারীতি নির্বিকার।

বোঝাই যায়, যেটুকু ছবি উঠে এসেছে, তা হীমশৈলের চূড়া মাত্র। এক শতাংশও নয়। কারণ, আক্রান্ত হতে পারি, এই আশঙ্কায় অধিকাংশ ব্লক অফিসের ধারেকাছেও গণমাধ্যম ছিল না। কেউ মোবাইলে তুলতে গেলে মোবাইল কেড়ে নেওয়া হয়েছে।

এটা হবে, জানাই ছিল। তাই যাঁরা ভেবেছিলেন, একদিন মনোনয়নের সময় বাড়ল বলেই সব মনোনয়ন জমা পড়ে যাবে, তাঁরা এবার বাস্তবটা বুঝলেন তো?‌ আবার বলছি, হাইকোটের সেই রায় ছিল পর্বতের মূষিক প্রসব। শুধু একদিন মনোনয়নের দিন বাড়ানো আর ভোটের দিন পেছনো, এতেই ভেবে নিলেন যুদ্ধজয় হয়ে গেছে। রাজ্য প্রশাসনকে, নির্বাচন কমিশনকে চড়া তিরষ্কার ও ভর্ৎসনা দরকার ছিল। যার ধারেপাশেও যায়নি হাইকোর্ট। আর বিরোধীরাও মামলাটাকে এমন লঘু করে ফেলেছিলেন, যার এমন ফলই হয়ত প্রত্যাশিত ছিল।

আবার পরম পুলকে ছুটলেন হাইকোর্টে। না আছে তথ্য। না ঠিকঠাক যুক্তি। সেই চায়ের দোকানের চর্বিত চর্বন ভাষণ। যাঁরা ন্যূনতম আইন বোঝেন না, তাঁরা কথায় কথায় মামলা করতে ছোটেন কেন?‌

Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.