রজত সেনগুপ্ত
কোথায় কোনটা বলতে হয়, আর কোথায় কোনটা বলতে নেই, এই বোধটা অনেকেরই থাকে না। এমনকী আমাদের মুখ্যমন্ত্রীরও নেই। প্রতিটি প্রশাসনিক বৈঠকেই তার ছাপ পাওয়া যায়।
পঞ্চায়েত ভোট যত এগিয়ে আসছে, ততই যেন এই প্রবণতা বেড়ে যাচ্ছে। সরকারি সভা নাকি দলীয় সভা, গুলিয়ে ফেলছেন। এখন তো প্রশাসনিক বৈঠক সরাসরি টিভিতে দেখানো হয়। কাকে কীভাবে ধমক দিচ্ছেন, সবাই দেখতে পান। আর যেহেতু টিভিতে দেখানো হয়, তাই নাটকীয়তাও বেড়ে যায়। সেই অফিসারকে শোনানো নয়, জনতাকে শোনানোই যেন আসল লক্ষ্য হয়ে দাঁড়ায়।
কখনও বলছেন, পুরনো লোকদের টিকিট দিতে হবে। কখনও বলছেন, তোলাবাজি করলে আমার দলে টিকিট পাওয়া যাবে না। কথায় কথায় তৃণমূল, বিজেপি, সিপিএম— এই শব্দগুলো টেনে আনছেন। অমুক লোক দলের পুরনো কর্মী, অমুক লোকের সঙ্গে ঝগড়া মিটিয়ে নাও। এই জাতীয় মণিমাণিক্য ছুটিয়েই চলেছেন।
দলীয় নেত্রী হিসেবে দলের নেতাদের তিনি ধমক দিতেই পারেন। রাজনৈতিক পরামর্শ দিতেই পারেন। কিন্তু এগুলো সরকারি বৈঠক, সরকারি আমলারা রয়েছেন, এখানে এইসব বলতে নেই, এই বোধটুকুও থাকবে না? আটের দশকে, নয়ের দশকে অনেক প্রধান বা পঞ্চায়েত মেম্বারদের দেখেছি। অনেকে হয়ত মাধ্যমিক পাসও ছিলেন না। কিন্তু তাঁরাও জানতেন, কোন কথাটা পার্টি অফিসে বলতে হয়, আর কোন কথাটা পঞ্চায়েত অফিসে বলতে হয়। পার্টির মিটিং আর পঞ্চায়েতের মিটিংয়ের তফাতটা তাঁরাও বুঝতেন। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী এবং অন্যান্য বেশ কয়েকজন মন্ত্রীকে দেখে মনে হয়, এঁদের সেই সাধারণ জ্ঞানটুকুও নেই।
(এটি ওপেন ফোরামের লেখা। ওপেন ফোরাম মানে, পাঠকের মুক্তমঞ্চ। নানা বিষয় নিয়ে মতামত দেওয়া যায়। চাইলে, আপনিও আপনার মতামত পাঠাতে পারেন। লেখা পাঠানোর ঠিকানা:
bengaltimes.in@gmail.com)