ভুলটা তিন সপ্তাহ আগেই হয়ে গেছে, কমরেড

রক্তিম মিত্র

অভিষেক মনু সিংভির মনোনয়নে নাকি ভুল আছে। তাই এবার বামেরা উঠেপড়ে লেগেছেন সেই মনোনয়ন বাতিল করতে। রিটার্নিং অফিসারের কাছে নালিশ জানিয়েছেন। নির্বাচন কমিশনারের কাছে নালিশ জানিয়েছেন। ঘটা করে সাংবাদিক সম্মেলনও করেছেন।
কী হবে?‌ এখনই বলে দেওয়া যায়, যতই অভিযোগ জানানো হোক, মনোনয়ন বৈধ বলেই ঘোষণা হবে। টেকনিক্যাল দু একটি ত্রুটি হয়ত আছে। কিন্তু সেখান থেকে বেরিয়ে আসার রাস্তাটাও অভিষেক মনু সিংভির জানা আছে। মাঝখান থেকে বাংলার বাম আর বাংলার কং নেতৃত্বের মধ্যে সম্পর্কটা আরও তিক্ত হল।

left front12
এখন এত তৎপরতা। কয়েকদিন আগেও যদি এই তৎপরতা থাকত, তাহলে এই পরিস্থিতি তৈরিই হত না। বাম নেতৃত্ব নিজেদের গড়িমসিতেই এই পরিস্থিতি ডেকে এনেছেন।
এই রাজ্য থেকে বিরোধীদের সম্মিলিত একজন প্রার্থী পাঠানো যেতেই পারত। কোথাও কোনও সমস্যা ছিল না। বর্তমানে বিধানসভায় যা পরিস্থিতি, এককভাবে বামেদের কারও পক্ষে যাওয়া সম্ভব নয়। এককভাবে কংগ্রেসের থেকেও কাউকে পাঠানো মুশকিল। সহজ অঙ্ক, দুই দলের মিলিত একজন নির্দল প্রার্থী দাঁড় করানো। জয় নিশ্চিত, এই অবস্থায় অনেকেই রাজি হতেন। এমন যোগ্য প্রার্থীর অভাবও ছিল না। কংগ্রেসের দিক থেকেও নির্দল কাউকে পাঠাতে আপত্তি ছিল না। কিন্তু বাম নেতৃত্ব অহেতুক কালবিলম্ব করতে লাগলেন। কংগ্রেস হাইকমান্ড আর অপেক্ষা না করে প্রার্থী ঘোষণা করে দিলেন। বাকি যে কটা ভোট দরকার, তৃণমূলের দিক থেকে সমর্থনের আশ্বাস তো ছিলই।

ফল কী হল?‌ সারদা মামলায় যিনি প্রতারকদের হয়ে মামলা লড়লেন, তিনি এই রাজ্য থেকে রাজ্যসভায় যাবেন। রাজ্য নেতৃত্বের আর কিছুই করার ছিল না। তাঁরা আর কত অপেক্ষা করবেন?‌ প্রায় এক দশক আগে বামেদের একটা হঠকারিতা কংগ্রেস আর তৃণমূল শিবিরকে কাছাকাছি এনে দিয়েছিল। এবার বাংলার বাম নেতৃত্বের বদান্যতায় কংগ্রেস–‌তৃণমূল ফের কাছাকাছি। একটা রাজ্যসভার আসন বড় কথা নয়। কিন্তু এই আসনকে ঘিরে দুই শিবির কাছাকাছি থাকতে পারত। একজন যোগ্য প্রতিনিধিকে রাজ্যসভায় পাঠানো যেত। তার বদলে এমন একজন যাচ্ছেন, যিনি যত না কংগ্রেসের ওপর নির্ভরশীল, তার থেকে বেশি করে তৃণমূলের আশীর্বাদধন্য।

কংগ্রেস নেতৃত্বের দিকে আঙুল তোলাই যায়। কিন্তু তাতে বামেদের ভুলটা ঢাকা পড়বে না। সেদিন সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারলে আজ এভাবে নির্বাচন কমিশনের কাছে নালিশ জানাতে হত না। নিজেদের এভাবে হাসির খোরাক হতে হত না।

invitation

Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.