শতদল ভদ্র
কয়েক মাস আগের কথা। পাহাড়ের গোপন ডেরা থেকে মাঝে মাঝেই উড়ে আসত বিমল গুরুংয়ের অডিও বার্তা। কখনও হুঙ্কার। কখনও ফিরে আসার বার্তা। শুরুর দিকে কাগজে বেরোতো। টিভিতেও ব্রেকিং নিউজে দেখানো হত। আস্তে আস্তে কেমন যেন গুরুত্ব হারিয়ে গেল। একদিন আগেও পাঠিয়েছেন, কোনও মিডিয়াই তেমন পাত্তা দিল না।
আপনি কোথায় লুকিয়ে আছেন, জানা নেই। মাঝে মাঝেই আপনার অডিও টেপ হোয়াটস অ্যাপ মারফত আসছে, ছড়িয়ে যাচ্ছে। নিজের পক্ষে এটা সেটা বলার চেষ্টা করছেন। কোনওটাই তেমন আমল পাচ্ছে না। সিআইডি রোজ আপনার বাড়ি থেকে কিছু না কিছু উদ্ধার করছে। কোনওদিন কোটি কোটি টাকার বান্ডিল বেরোচ্ছে। কোনওদিন ব্যাঙ্কের লকার থেকে একশো ভরি গয়না বেরোচ্ছে। আপনি কখনও বলছেন, এগুলো আপনার আগে থেকেই ছিল। আবার কোনওটার ক্ষেত্রে বলছেন, এগুলো আগে থেকেই সাজানো ছিল।

মাঝে মাঝেই বলছেন, সিআইডিতে আমিও ছিলাম। কীভাবে ওরা এগুলো সাজাচ্ছে, আমি জানি। সিআইডি যে ধোয়া তুলসী পাতা, তা নয়। কারও পেছনে লাগলে কীভাবে তাকে নাস্তানাবুদ করতে হয়, সেটা তারা ভালই জানে। একটা কথা পরিষ্কার, আপনি যখন পুলিশ সুপার ছিলেন, এই জাতীয় নানা অপকর্ম আপনিও করেছেন। মিথ্যে মামলায় ফাঁসানো থেকে শুরু করে কারও ঘরের কাছে কঙ্কাল পুঁতে আসা। কাউকে ভয় দেখিয়ে শাসক দলে আনা থেকে শুরু করে নানা জায়গায় তোলাবাজি। এত এত কাণ্ড করেছেন, আপনার প্রতি কারও তেমন সহানুভূতি দেখা যাচ্ছে না। যে জেলায় ছিলেন, সেই জেলার মানুষ বেশ ভালমতোই জানে, আপনি কাদের তাঁবেদার ছিলেন। সরকারকে খুশি করতে কী না করেছেন!
এখন যা যা হচ্ছে, এটাই বোধ হয় আপনার প্রাপ্য ছিল। যাঁদের হয়ে এই সব অপকর্ম করেছিলেন, এখন তাঁরাই আপনার বিরুদ্ধে সেগুলো প্রয়োগ করছেন। এটাই তো হওয়ার কথা। আজ যাঁরা আপনাকে অপদস্থ করতে উঠেপড়ে লেগেছে, একদিন তাঁদেরও সেই পরিণতিই হবে। আপনি সৎ ছিলেন, প্রতিবাদী ছিলেন, এমনটা কেউই বিশ্বাস করবে না। কাদের কথায় উঠবস করতেন, কাদের কথায় অপকর্ম করতেন, কাদের প্রেরণায় চলতেন, একবার ভেবে দেখুন।
