বৃষ্টি চৌধুরি
সত্যিই, কিছু কিছু মানুষ একেবারেই ব্যতিক্রমী। যেমন তরুণ মজুমদার।
রাজ্যের বিভিন্ন হলেই চলছে ‘ভালবাসার বাড়ি’। কিন্তু তা নিয়ে কী নির্লিপ্ত পরিচালক তরুণ মজুমদার! কোনও আস্ফালন নেই। কোনও ব্র্যান্ড প্রমোশন নেই। টিভি চ্যানেলে চ্যানেলে দৌড়ে ইন্টারভিউ দেওয়া নেই। নিজের নিয়মেই চলছে ছবিটা।
রাত বিরেতে চলে ফিল্মের পার্টি। পেজ থ্রিতে ঘটা করে সেসব ছবি ছাপা হয়। প্রোডিউসাররা থাকেন, পরিচালকরা থাকেন, নায়ক–নায়িকারা থাকেন। ব্যবসায়ীরা থাকেন। কত কত রাঘব বোয়াল থাকেন। এসব জায়গায় নাকি যেতে হয়। এই রিলেশনগুলো না রাখলে নাকি কাজ পাওয়া যায় না। প্রায় সবাইকেই এই গড্ডালিকা প্রবাহে গা ভাসাতে হয়। এখানে একেবারেই ব্যতিক্রমী তরুণ মজুমদার। তিনি পার্টি–ফার্টি তে যান না। সাফ কথা, ওভাবে কাজ ধরায় বিশ্বাস করি না। এভাবে যদি কাজ পেতে হয়, তার থেকে না পাওয়াই ভাল।
কোনও একটা ছবির ভাবনা শুরু হলেই তাকে ঘিরে কত প্রচার! আগেই নানা কাগজে, চ্যানেলে ইন্টারভিউ খাইয়ে দেওয়া। ফার্স্ট লুক থেকে শুরু করে মিউজিক ভিডিও, কত হরেকরকমের অনুষ্ঠান। কিন্তু তরুণ মজুমদারকে টিভিতে বাইট দিতে দেখা যায় না। টিভি বা কাগজের লোককে ‘দাদা, একটু দেখবেন’ বলতে হয় না। চ্যানেলে ইন্টারভিউ দিতে ছুটতে হয় না। এমনকী চ্যানেল ডাকলেও সবিনয়ে সেই ডাক ফিরিয়ে দেন। কজন পরিচালকের মধ্যে এই সংযম দেখা যায়!
আর কি ছবি করতে পারবেন? জানা নেই। হয়ত এটাই তাঁর শেষ ছবি। এই ছবি নিয়েও কোনও আস্ফালন নেই। ঢাক পেটানো নেই। শেষ ছবিতেও এই সংযমটা বজায় রাখলেন। এই প্রজন্মের বড় বড় ভাষণ দেওয়া পরিচালকরা যদি তরুণবাবুর কাছে এই সংযমটুকু শিখতেন!