সুমিত চক্রবর্তী
যত দিন যাচ্ছে, গজিয়ে উঠছে একের পর এক বৃদ্ধাশ্রম। সেখানেই বৃদ্ধদের ঠিকানা। কেন এই বৃদ্ধাশ্রমে আসছেন প্রবীণ মানুষেরা? বাড়িতে ছেলে–বউয়ের কাছে তেমন যত্ন বা শ্রদ্ধা পাওয়া যায় না, এটা তো সার্বজনীন ব্যাপার। কিন্তু তার বাইরেও দিন দিন ক্রমশ নিঃসঙ্গ হয়ে উঠছেন এই প্রবীণ মানুষেরা। সবাই আছেন, অথচ, কেউ নেই। দুটো মনের কথা বলবেন, এমন সঙ্গী কই?
এগিয়ে এল হাওড়া পুলিশ। দারুণ এক পদক্ষেপ। গতবছরই বয়ষ্ক মানুষদের নিয়ে তৈরি হয়েছে একটি সংগঠন শ্রদ্ধা। সেখানে প্রবীণ মানুষেরা যেন বাঁচার নতুন ঠিকানা খুঁজে পেয়েছেন। নিয়োগ করা হয়েছে আলাদা একজন নোডাল অফিসার। তিনি বয়ষ্ক মানুষদের নানা সমস্যার ব্যাপারে খোঁজখবর রাখছেন।
এবার তৈরি হচ্ছে একটি লাইব্রেরি। বয়স্ক মানুষেরা সেখানে যাবেন। মনের মতো বই পড়বেন। সেখানে বসেও পড়তে পারেন। আবার সঙ্গে বাড়িতেও নিয়ে আসতে পারেন। এমনিতে লাইব্রেরির অভাব নেই। কিন্তু সেখানে পাঠকের দেখা নেই। কিন্তু এখানে লাইব্রেরির উদ্যোক্তা খোদ পুলিশ। তাঁরা প্রবীণ মানুষদের লাইব্রেরি মুখী করার উদ্যোগ নিয়েছেন। তাঁরা কী ধরনের বই পড়তে চান, জেনে নেওয়া হবে। সেই পছন্দ অনুযায়ী বই আনা হবে। এমন উদ্যোগ নিয়েছেন পুলিশ কমিশনার দেবেন্দ্রপ্রকাশ সিং। তাঁরা যেন বাড়িতে একা একা বিরক্ত না হয়ে ওঠেন, সেই কারণে বাইরের দুনিয়ার সঙ্গে মেলবন্ধন ঘটানোর চেষ্টা। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তাঁদের নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। কোথাও কোথাও তাঁরা বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশও নিচ্ছেন। সবমিলিয়ে বাঁচার নতুন ঠিকানা এনে দিতে অনেকটাই উদ্যোগী হাওড়া জেলা পুলিশ।
পুলিশের বিরুদ্ধে নানা সময়ে আমাদের নানা অভিযোগ জমে থাকে। কিন্তু যেটা সন্তান হিসেবে আমাদের করার কথা, সেই দায়িত্ব কি আমরা পালন করছি? বোধ হয় ঠিকঠাক করছি না। তাই ঘরে ঘরে এত দীর্ঘশ্বাস। তাই প্রবীণ মানুষদের খুঁজে নিতে হচ্ছে বৃদ্ধাশ্রমের ঠিকানা। যাঁরা বাড়িতে আছেন, তাঁরাও বড়ই নিঃসঙ্গ। এই নিঃসঙ্গতা ও অবসাদ কাটাতে এগিয়ে এল জেলা পুলিশ। সত্যিই প্রশংসনীয় উদ্যোগ। সব জেলায় যদি এমন উদ্যোগ ছড়িয়ে পড়ত!
(এরকম নানা প্রশংসীয় উদ্যোগ ছড়িয়ে আছে। চাইলে সেগুলো তুলে ধরতে পারেন। পাঠিয়ে দিন বেঙ্গল টাইমসের ওপেন ফোরামে। লেখা পাঠানোর ঠিকানা: bengaltimes.in@gmail.com)