দার্জিলিং মেলকে ঘিরে জটিলতা কেন?‌

কৌশিক রায়

একটি ট্রেনকে নিয়ে অহেতুক জটিলতা তৈরি হয়েছে। আর এই জটিলতা তৈরি করেছে রেল নিজে।
কয়েকদিন ধরেই গোটা উত্তরবঙ্গ জুড়ে জোর খবর, দার্জিলিং মেল নাকি আলিপুরদুয়ার থেকে আসবে। অর্থাৎ এনজেপিতেই শেষ নয়, তার গন্তব্য আলিপুরদুয়ার। পর্যটকদের জন্য এটা অবশ্যই ভাল খবর। এতদিন ধরে ডুয়ার্সের ভেতর দিয়ে যেত শুধু কাঞ্চনকন্যা। এবার আরও একটা ট্রেন বাড়বে। দিব্যি ডুয়ার্সের জঙ্গল চিরে ট্রেন পৌঁছে যাবে আলিপুরদুয়ারে।
কিন্তু মুদ্রার আরও একটা দিক আছে। এই ট্রেন যদি আলিপুরদুয়ার থেকে ছাড়ে, নানা সমস্যাও তৈরি হতে পারে। কলকাতা থেকে যাওয়ার সময় খুব একটা সমস্যা নেই। কিন্তু আলিপুরদুয়ার থেকে আসার সময় সমস্যা হতেই পারে।
১)‌ সিঙ্গল লাইন। ফলে, লেট অনিবার্য। ফলে শিলিগুড়িতে এই ট্রেন ছাড়ার কথা রাত আটটায়। অধিকাংশ দিনই সময় মতো আসবে না। ফলে, কলকাতা পৌঁছতেও অনেক দেরি হবে।

darjeeling mail2
২)‌ এই ট্রেনের সঙ্গে অনেত অতীত জড়িয়ে আছে। গান্ধীজি থেকে নেতাজি, অনেকেই এই ট্রেনে চড়েছেন। তখন থেকেই এটা শিলিগুড়ি পর্যন্ত। খোদ ব্রিটিশরা নামকরণ করে গেছেন দার্জিলিং মেল। আলিপুরদুয়ার পর্যন্ত এই ট্রেন চালালে সেই ঐতিহ্য নষ্ট হতে পারে, এমনটাও অনেকে মনে করছেন।
৩)‌ ট্রেনটি আলিপুরদুয়ার পৌঁছবে হয়ত বেলা একটা নাগাদ। তারপর আবার তিনটে নাগাদ ছাড়তে হবে। দূরপাল্লার ট্রেন মাত্র দু ঘণ্টা পর আবার উল্টো পথে চলতে শুরু করবে?‌ সমস্যা হতেই পারে।
৪)‌ দার্জিলিং ও শিলিগুড়ির অনেকেই নির্ভর করেন এই ট্রেনটির ওপর। কিন্তু ট্রেনটি যদি আলিপুরদুয়ার থেকে ছাড়ে, তাহলে জেনারেল বগি আগেই ভরে থাকবে। পাহাড়ের মানুষ বসার সুযোগই পাবেন না।
৫)‌ রিজার্ভেশনের ক্ষেত্রেও সমস্যা দেখা দেবে। একেই এই ট্রেনে জায়গা পাওয়া যায় না। তার ওপর যদি আলিপুরদুয়ার ভাগ বসায়, শিলিগুড়িতে ক্ষোভ দেখা দেবে।

তাই এইসব জটিলতাও আছে। রেল এই সব বিষয় না ভেবেই আলিপুরদুয়ারের নাম ভাসিয়ে দিয়েছে। উত্তরবঙ্গের দুই শহরের মধ্যে অহেতুল বিভেদ তৈরি হয়েছে। আলিপুরদুয়ার থেকে অন্য ট্রেন দেওয়া যেতেই পারে। তার জন্য দার্জিলিং মেলকে নিয়ে এই জটিলতা কেন?‌

Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *