সন্দীপ লায়েক
২৬ থেকে ২৮ জানুয়ারি- শনি রবি নিয়ে তিনদিন টানা ছুটি। তা ২৭ তারিখ বিকেলটা ভেবেছিলাম সপরিবারে ময়দানে বসেই কাটাবো। কিন্তু বাধ সাধল দুপুরের বাড়তি অন্ন ও তার কর্মফলে ভাতঘুম। ধড়পড় করে উঠে দেখি বিকেল সাড়ে চারটা, সন্ধ্যে নামতে আর মাত্র ঘন্টা খানেক বাকি! প্ল্যান চৌপাট।
কী করা যায়, কী করা যায় ভাবতে বসে মনে এল রবিঠাকুরের বানী-“দেখা হয় নাই চক্ষু মেলিয়া, ঘর হতে দুইপা ফেলিয়া..” সুতরাং চলো যাই..পাটুলীর ভাসমান বাজারে!
পাটুলী থানা থেকে শুরু করে শহীদ ক্ষুদিরাম মেট্রো স্টপেজের দিকে এগুতে থাকা নোংরা লেক জুড়ে এখন নীল সাদা আলোর শোভা। লেকের ওপরে একশোরও বেশি নৌকা নিয়ে গড়ে উঠেছে কলকাতা দর্শনের লিস্টে নতুন সংযোজন- সুদৃশ্য এই ভাসমান বাজার। পুকুরের জলে ভারতের প্রথম তো অবশ্যই, এশিয়ারও নাকি প্রথম এই ভাসমান বাজার!
লেকের ওপর আঁকা বাঁকা শক্তপোক্ত কাঠের ব্রিজে হেঁটে চলে যাওয়া যায় যে কোনও প্রান্তের নৌকায়। প্রতিটি নৌকাতেই রয়েছে বিদ্যুৎ সংযোগ। বিক্রি হচ্ছে ফুল ফল সব্জি থেকে প্রায় সবকিছুই। মাঝখানের সুন্দর ফোয়ারাটা আপন খেয়ালে রং পাল্টে চলেছে।
পাটুলী থানার কাছে লেকের প্রবেশ দ্বার। গেটের মুখেই রেস্টুরেন্ট। উড়ো বিক্রি হচ্ছে নানান ধরনের রোল। লেকের পাশে সারিসারি বাঁধানো চেয়ার। লোকজন পটাপট সেল্ফি ও বিভিন্ন অ্যাঙ্গেলে ছবি তুলে চলেছেন। যদিও কেনাকাটায় কারও তেমন আগ্রহ আছে বলে মনে হল না। চারদিক ভেসে আসছে বিক্রেতাদের কথা –দাদা কিছু অন্তত নিন!
কিন্তু সদ্য নির্মিত এই ভাসমান বাজারে আমার মতো বেশির ভাগ মানুষই এখানে বেড়াতে এসেছেন। কেনার জন্য নয়। যাই হোক সময়টা দিব্যি কেটে গেল। দিনটা সার্থক হতে মনটাও ফুরফুরে হয়ে এল।
দরকারি পরামর্শ: যে কোনও বাস ধরে পাটুলী মোড়ে নামুন। ট্রেনে এলে গড়িয়া স্টেশনে নেমে বাস ধরে মিনিট পাঁচেক। মেট্রোতে এলে বেস্ট অপশন শহীদ ক্ষুদিরাম মেট্রো স্টপেজ। সন্ধ্যের সময় এলে ভালো লাগবে নিশ্চিত।
(কলকাতার আনাচে কানাচে এমন অনেক জানা–অজানা ঠিকানা। এ কলকাতার মধ্যে আছে আরেকটা কলকাতা। সেই কলকাতাকে চাইলে আপনিও তুলে ধরতে পারেন। লেখা পাঠানোর ঠিকানা: bengaltimes.in@gmail.com)