বইমেলায় চূড়ান্ত ভোগান্তি এবার অনিবার্য। এত মানুষ আসবেন কীভাবে? ফিরে যাবেন কীভাবে? এত বাস রাখার, এত অটো দাঁড়ানোর জায়গা আছে? বইমেলার ভিড় সম্পর্কে বিধাননগরের মেয়র বা পুরমন্ত্রীর কোনও ধারণাই নেই। লিখেছেন বিপ্লব মিশ্র।।
বইমেলা সেন্ট্রাল পার্কে কেন? প্রথমে শুনেছিলাম, মিলন মেলায় নাকি সংস্কার চলছে। তাই এই বছরের জন্য সেন্ট্রাল পার্কে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ইদানীং শুনছি অন্য গল্প। বলা হচ্ছে আগামী বছরও নাকি বইমেলা সেন্ট্রাল পার্কেই হবে। সেইভাবেই নাকি সাজানো হচ্ছে।
যদি মিলন মেলা সংস্কার আসল কারণ হয়, তাহলে সামনের বছর ফের মিলন মেলায় হতে তো বাধা থাকার কথা নয়। তাহলে, সামনের বছরও সল্টলেকে করার কথা উঠছে কেন? মিলন মেলা সংস্কার হতে কদিন লাগে? নিশ্চয় দু–তিন বছর লাগবে না।
প্রতিটি কাজেই দূরদর্শিতার বড়ই অভাব। রাইটার্স থেকে যখন নবান্নে স্থানান্তর হল, বলা হল ছমাসের জন্য যাওয়া হচ্ছে। ছ মাস পরেই আবার দপ্তরগুলো রাইটার্সে ফিরে আসবে। ছ মাসের জায়গায় ছ বছর পেরিয়ে গেল। আগামী ৬ বছরেও রাইটার্সের সংস্কার শেষ হবে কিনা, কে জানে!
বইমেলার ক্ষেত্রেও তাই। মিলন মেলার সবথেকে বড় ইভেন্ট কী? নিঃসন্দেহে বইমেলা। সংস্কার যদি দরকারই হয়, তাহলে অনেক আগে থেকে সেই কাজ শুরু করা উচিত ছিল। যেন বইমেলার সময় সেই কাজ শেষ হয়ে যায়। শেষমেষ বইমেলাকেই কিনা উচ্ছেদ করতে হল। এবার সেন্ট্রাল পার্কে বইমেলা চূড়ান্ত ব্যর্থ হবে, এখন থেকেই হলফ করে বলা যায়। এত হাজার হাজার মানুষের ভিড়কে সামাল দেওয়ার মতো পরিকাঠামো নেই। যা থাকা দরকার, তার সিকিভাগও আছে কিনা সন্দেহ। এমনিতেই করুণাময়ীতে ভিড় সামাল দেওয়া যায় না। যদি বাড়তি বাস দেওয়াও হয়, সেগুলো থাকবে কোথায়? বাস টার্মিনাসে সাধারণ দিনেই ভিড় লেগে থাকে। এর বাইরে আরও শতাধিক বাস সেখানে ঢুকতে পারবে? মানু্ষ আসবেই বা কীভাবে আর ফিরে যাবে কীভাবে? চূড়ান্ত দুর্ভোগের জন্য এখন থেকেই তৈরি থাকুন। যেটুকু ফাঁকা জায়গা, তার অর্ধেক তো মমতা ব্যানার্জির ‘অণুপ্রেরণা’র হোর্ডিং লাগাতেই চলে যাবে।
এর মধ্যেই বিধাননগরের মেয়র দাবি করছেন, আগামী বছরেও বইমেলা এই মাঠেই হবে। গলা মিলিয়েছেন নগরোন্নয়নমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। বইমেলার সম্পর্কে এই দুজনের আদৌ কোনও ধারণা আছে? আগে এবছরটা সামাল দিন। তারপর না হয় পরের বছরের কথা ভাববেন।