নন্দ ঘোষের কড়চা
সবকিছুকেই একটু বাঁকা চোখেই দেখেন নন্দ ঘোষ। যতই উন্নয়নের যজ্ঞ চলুক, তিনি খোঁজের অন্যকিছু। এবার তিনি পড়লেন জিন্দালদের নিয়ে। এই নিয়েই এবার নন্দ ঘোষের কড়চা।
সেই কতকাল আগে কেউ একজন বলেছিলেন, কৃষি আমাদের ভিত্তি, শিল্প আমাদের ভবিষ্যৎ। অর্থাৎ, কৃষি থেকে শিল্পে উত্তরণ। সারা বিশ্ব এই নিয়মেই এগিয়ে চলেছে। কিন্তু জিন্দালবাবুদের যে কী হল! তারা হাঁটছে একেবারেই উল্টো পথে। সত্যিই, অনুপ্রেরণা বড় সাংঘাতিক জিনিস।
প্রায় বছর দশেক আগে এই রাজ্যে পা পড়েছিল সজ্জন জিন্দালের। দারুণ স্বপ্ন দেখিয়ে যাত্রা শুরু হয়েছিল। সেদিন কথা ছিল, প্রায় ৩৫ হাজার কোটি বিনিয়োগ করে তৈরি হবে ইস্পাত কারখানা। কাজ পাবেন অন্তত ৫ হাজার মানুষ।
তারপর যা হয়! সবকিছুই কেমন উল্টে পাল্টে গেল। ছিল বেড়াল, হয়ে গেল রুমাল। দিদিমণির মন রাখতে শেষমেষ সিমেন্ট কারখানার শিলান্যাস। মাত্র দেড়শো লোকের কর্মসংস্থান। তার কী ঘটা করে শিলান্যাস হয়েছিল ২ বছর আগে। শালবনিতে কী ঘটা করে উদ্বোধনটাই না হল। যেন রাজ্যে শিল্পের জোয়ার বয়ে গেল! করলি তো বাবা একটা সিমেন্ট কারখানা, চাকরি তো দিলি মাত্র দেড়শো লোককে। এত ঘটার কী আছে বাপু!
পরের ঘোষণাটা আরও মারাত্মক। এবার তারা নাকি গাছ লাগাবেন। আম, কলা, লিচু, বেদানা এসব লাগাবেন। এতে অনেক মানুষের কর্মসংস্থান হবে। হায় রে! জিন্দালবাবুদের কী দুর্দশা। ইস্পাত কারখানা ছেড়ে তাঁদের এবার আম গাছ লাগাতে হবে! আর সেটাও ফলাও করে বলতে হচ্ছে! শিল্প যাদের ভিত্তি ছিল, গাছ লাগানো কিনা তাদের ভবিষ্যৎ হয়ে দাঁড়াচ্ছে!
সত্যিই, অনুপ্রেরণা বড় সাংঘাতিক জিনিস।।।
(বেঙ্গল টাইমসের জনপ্রিয় বিভাগ— নন্দ ঘোষের কড়চা। সাহিত্য থেকে খেলা, সিনেমা থেকে শিল্প, সব দিকেই তাঁর বিচরণ। বাকিরা যা দেখেন, নন্দ ঘোষ দেখেন ঠিক উল্টোটা। )