সারদা বা রোজভ্যালির থেকেও সিবিআইয়ের বিশ্বাসযোগ্যতা কম

রক্তিম মিত্র
বিস্তর গবেষণা করিয়া গবেষকরা এই সিদ্ধান্তে আসিলেন, গরু ঘাস খায়। সিবিআই এর কাজকর্ম দেখে তেমনটাই মনে পড়ে।
সারা কাণ্ডে কী হয়েছে, তার আসল নির্যাসটা কী, সবাই জানে। জানে না শুধু সিবিআই। সাড়ে তিন বছর ধরে তদন্ত করার পর তাঁদের মনে হল, রাজ্য পুলিশ ঠিক সাহায্য করছে না। তারা প্রমাণ লোপাট করছে।
এটা বুঝতে বুঝি গোয়েন্দা হতে হয়?‌ এটা বুঝতে বুঝি সিবিআই হতে হয়?‌ সুপ্রিম কোর্টে তারা কাঁদুনি গেয়েছে রাজ্য সরকারের নামে। সাড়ে তিন বছর ধরে সিবিআই তাহলে করলটা কী?‌ তাঁরা বুঝি অপেক্ষায় ছিলেন, কখন পুলিশ এসে সব তথ্য তুলে দিয়ে যাবে। আর তাঁরা রেডিমেড তদন্ত রিপোর্ট জমা করে বাহবা কুড়োবেন?‌

cbi
আরে বাবা, সিবিআইটা হল কেন?‌ সুপ্রিম কোর্ট তদন্তের নির্দেশ দিল কেন?‌ রাজ্য সরকার তদন্তে গড়িমসি করতে পারে, অপরাধীদের আড়াল করতে পারে, এই মর্মেই আবেদন জানানো হয়েছিল। তদন্ত আটকাতে রাজ্য সরকার চেষ্টার কোনও ত্রুটি রাখেনি। ভিন রাজ্য থেকে কোটি কোটি টাকা দিয়ে আইনজীবী ভাড়া করে কেস লড়া হয়েছিল শুধু যেন সিবিআই তদন্ত না হয়, সেটা আটকাতে। এই মনোভাব জানার পরেও সিবিআই বাবুরা আশা করেছিলেন, রাজ্য সরকার সবরকম সহযোগিতা করবে!‌
প্রমাণ যা লোপাট হওয়ার, অনেক আগেই হয়ে গেছে। তবু কিছু হয়ত বাঁচিয়ে রাখা যেত। সিবিআইয়ের অপদার্থতায় সেটাও নষ্ট হয়েছে। কোন কোন অফিসার প্রমাণ লোপাটের কুকর্মে জড়িয়ে, যাঁরা একটু সচেতন মানুষ, তাঁরা সবাই জানেন। সাড়ে তিন বছরেও সিবিআই তাঁদের সামান্য জিজ্ঞাসাবাদটুকু করতে পারল না। সময় চলিয়া যায় নদীর স্রোতের প্রায়। নাম কে ওয়াস্তে প্রথম কয়েকদিন দু একজনকে জেরা, দু একজনকে ধরপাকড়। তারপর সেই ঠান্ডা ঘরেই চলে গেল। তাহলে জনগণের করের টাকা দিয়ে এই সিবিআই পোষার দরকার কী?‌ যেটা একটা কনস্টেবল পারে, যেটা পাড়ার পাঁচুগোপাল পারে, সেটাও সিবিআই পারে না। চার বছর পর কোর্টের কাছে কাঁদুনি গায়।
সারদা তদন্ত পরে হবে। কারা অপরাধী, সে বিচারও বরং পরে হবে। আগে এই তদন্তকারী অফিসারদের গ্রেপ্তার করা হোক। এই অপদার্থতার জন্য তাঁদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হোক। সিবিআইয়ের যা বিশ্বাসযোগ্যতা, অন্তত সারদা বা রোজভ্যালির বিশ্বাসযোগ্যতা তার থেকে অনেক বেশি। এই বিশ্বাসযোগ্যতা যদি ফিরিয়ে আনতে হয়, সুপ্রিম কোর্টকেই এগিয়ে আসতে হবে।

Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.