স্মৃতিটুকু থাক
ফেলে আসা দিন মানেই একটা নস্টালজিয়া। টুকরো টুকরো কত স্মৃতির ভিড়। জীবনে যত ব্যস্ততাই আসুক, সেই স্মৃতিগুলো হারিয়ে যাওয়ার নয়। ফিরে ফিরে ঠিক এসে যায়। আর একটু অবসর পেলে তো কথাই নেই। কারও মনজুড়ে আছে স্কুলজীবনের স্মৃতি। স্কুল পালিয়ে খেলতে যাওয়া বা দুপুরে আম পাড়তে যাওয়া। স্কুলে পড়তে পড়তেই কারও জীবনে এসে যায় প্রথম প্রেম, কারও আবার প্রেমের সঙ্গে এসে যায় যন্ত্রণা। সবকিছুই একে একে মনে পড়ে যায়। সে প্রেমও বড় সত্যি, সে যন্ত্রণাও বড় পবিত্র। স্কুল পেরিয়ে কলেজ জীবন। সেখানেও কত স্মৃতির কোলাজ। কলেজ রাজনীতি থেকে দল বেঁধে হারিয়ে যাওয়া। হইহুল্লোড় থেকে দাঁতে দাঁত চেপে লড়াই। এক জীবনে কত ভিন্ন স্রোত।
এসবকিছু নিয়েই স্মৃতিটুকু থাক। এটা কোনও সেলিব্রিটিদের কলাম নয়। একেবারে আম আদমির কথা। প্রায় দু’ বছর ধরে চলছে বিভাগটি। এর মধ্যেই বেশ জনপ্রিয়। শুরুতে চিঠি পাঠাতে হয়ত কিছুটা দ্বিধা থাকত। এখন কিন্তু অনেক চিঠি আসছে। অনেকেই নিজের নানা অভিজ্ঞতার কথা মেলে ধরছেন। দাবি উঠছে, শুধু শনি–রবিবার কেন, সপ্তাহে সাতদিনই সচল থাকুক এই বিভাগ। এখনও হয়ত তেমন সিদ্ধান্ত নেওয়ার মতো সময় আসেনি। তবে পাঠকদের আগ্রহ যদি আরও বাড়ে, এই দাবি যদি আরও জোরদার হয়, তখন সেই পথে হাঁটাই যায়।
সবার জীবনেই তো টুকরো টুকরো নানা অভিজ্ঞতার সমারোহ। সেগুলো যদি অন্যদের সঙ্গে ভাগ করে নেওয়া যায়, মন্দ কী? জীবনে চলার পথে হারিয়ে যাওয়া কোনও বন্ধুর সেই দুস্টুমির কথা উঠে আসতেই পারে। কোনও মাস্টারমশাইয়ের ধমক বা স্নেহের শাসন, সরস্বতী পুজো বা দুর্গা পুজোর ছোট ছোট ঘটনা, যেগুলো মাঝে মাঝেই মনে পড়ে যায়। লড়াইয়ের দিনগুলোয় কারা বাড়িয়ে দিয়েছিলেন সাহায্যের হাত? জীবনের এতটা পথ পেরিয়ে আসার পর যদি কৃতজ্ঞতা স্বীকার করতে ইচ্ছে করে, সেই দরজা খোলা থাক। ছোটবেলার বা কলেজ জীবনের কোনও একটা ভুল, যা আজও তাড়া করে বেড়ায়, মনে হয় ক্ষমা চাইতে পারলে হয়ত কিছুটা হালকা লাগত। অকপটে সেসব কথাও বলা যায়। তারপর দরকার হলে সেই লেখার লিঙ্ক পাঠিয়ে দিন সেই মানুষটির কাছে। সহজ কথা, কোনও গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ নয়, কোনও তাত্ত্বিক বিশ্লেষণ নয়, একেবারে মনের কথা, সহজ ভাষায়। যেন ‘নদী আপন বেগে পাগল পারা’। নিজের ভাবনার ডালপালা মেলে ধরুন।
লেখার অভ্যেস নেই? ঠিক গুছিয়ে লিখতে পারছেন না? এ নিয়ে হীনমন্যতায় ভোগার কোনও কারণ নেই। আপনি আপনার মতো করেই লিখে পাঠান। যদি কোথাও কোনও অসঙ্গতি বা অসংলগ্নতা থেকেও থাকে, আমরা ঠিক সাজিয়ে নেব। তাহলে আর দেরী কেন? নিজের মধ্যে পুষে রাখা জড়তার প্রাচীর ভেঙে ফেলুন। আপনার সযত্নে লুকিয়ে রাখা স্মৃতি ভাগ করে নিন অন্যদের সঙ্গেও। তবে একটা কথা মাথায় রাখা ভাল, কারও বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ বা কুৎসা না করাই ভাল। ব্যক্তিগত আক্রমণ থেকে দূরে থাকুন। খারাপ স্মৃতি তো সবারই থাকে। সেই কাদা ঘেঁটে, অন্যকে দোষারোপ করে লাভ কী? আমরা না হয় ভাল স্মৃতিগুলোকে নিয়ে একটু নাড়াচাড়া করলাম। বেঙ্গল টাইমসের পাতায় সেই সুখস্মৃতি ভিড় করুক।