ফেসবুক কত ক্ষতি করছে, বাংলাদেশ বুঝেছে। আমরা এখনও বুঝিনি। কখনও কখনও ছোটদের কাছেও শিখতে হয়। রাত বারোটা নয়, রাত দশটা থেকেই বন্ধ হোক এই উৎপাত। নইলে চোখের সামনে একটা প্রজন্ম শেষ হয়ে যাবে। ওপেন ফোরামে লিখেছেন নিবেদিতা মান্না।।
অনেক খবরের ভিড়ে অনেক গুরুত্বপূর্ণ খবর হারিয়ে যায়। বেঙ্গল টাইমসে তেমনই একটি খবর চোখে পড়ল। বাংলাদেশে নাকি রাত বারোটার পর ফেসবুক বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। সকাল ছটা পর্যন্ত নাকি ফেসবুক আর খুলবে না।
অনেকে মনে করতে পারেন, এটা গণতন্ত্রের কণ্ঠরোধ। কিন্তু আমি এই সিদ্ধান্তকে পূর্ণ সমর্থন জানাচ্ছি। বেঙ্গল টাইমসের মাধ্যমে আমাদের দেশেও এই নিয়ম চালুর দাবি জানাচ্ছি। সোশাল মিডিয়া কী মারাত্মক আকার ধারণ করেছে, তা প্রতিদিন চোখের সামনে দেখছি। নিজের বাড়িতেই দেখতে পাচ্ছি।
আমার সন্তান সেকেন্ড ইয়ারে পড়ে। পড়ে তো লিখলাম, কতখানি পড়ে, জানি না। কারণ, এখন তাকে আর বই হাতে দেখি না। সারাক্ষণ মোবাইল হাতে কী সব যেন করে চলেছে। জিও সিম হাতে আসার পর থেকে এই নেশা আরও বেড়েছে। অনেক রাত পর্যন্ত জেগে থাকে। সারাক্ষণ খুটখাট করতেই থাকে। কী করে, জানি না। তবে এটুকু বুঝি, যা করছে, তার সঙ্গে ওর পড়াশোনার কোনও সম্পর্ক নেই। মানছি, বয়সটাই খারাপ। এই বয়সেই অনেকে বখে যায়। পরে এই সময়টা আর ফিরে পাওয়া যায় না। ওকে বারবার বুঝিয়েছি। কোনও ফল হয়নি। উল্টে রেগে যায়। দিন দিন প্রচণ্ড অসহিষ্ণু হয়ে পড়ছে। পরিষ্কার বুঝতে পারছি, ওর পড়ায় মন নেই। বাথরুমেও যায় ফোন নিয়ে। খেতে বসে খাওয়ার দিকেও মন থাকে না। এতটাই অ্যাডিক্টেড হয়ে গেছে, এক মুহূর্তও ফোন ছাড়া থাকতে পারছে না। আমার মতো অনেকের ঘরেই হয়ত এই সমস্যা। যার প্রতিকার কী, জানি না।
তাই বাংলাদেশের এই খবরটা পড়ে কিছুটা আশার আলো দেখতে পেলাম। ছোট্ট একটা দেশ। নিজের মাতৃভাষাকে ভালবেসে প্রাণ দিয়েছে। মাতৃভাষাকে ভালবাসে। অনেক ক্ষেত্রেই তারা আমাদের পথ দেখায়। যে যে সমস্যাগুলোর কথা বেঙ্গল টাইমসের প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে, আমাদের দেশেও তো সেই এক সমস্যা। পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, ধৈর্য হারিয়ে ফেলছে, অহেতুক রাত জাগছে, নিষিদ্ধ সম্পর্কে আসক্তি আসছে, কর্মসংস্কৃতি নষ্ট হচ্ছে। যাঁরা দেশ চালান, তাঁরা কি বুঝতে পারছেন না? তাই, আমার দেশেও এই নিয়ম চালু হোক। রাত বারোটা নয়, রাত দশটা থেকে ফেসবুকের উৎপাত বন্ধ হোক। বাংলাদেশ যদি পারে, আমরা পারি না?
(এটি ওপেন ফোরাম। পাঠকের মুক্তমঞ্চ। এই বিষয়ে আপনিও আপনার মতামত লিখে পাঠাতে পারেন। উপযুক্ত গুরুত্ব দিয়েই ছাপা হবে বেঙ্গল টাইমসে। লেখা পাঠানোর ঠিকানা: bengaltimes.in@gmail.com)