সিবিআই তুলে দেওয়া হোক

সরল বিশ্বাস
আচ্ছা বলুন তো, সিবিআই নামক সংস্থাটাকে রাখার আর কোনও যুক্তি আছে?‌ এটা তুলে দিলেই তো হয়।
যে যখন বিরোধী থাকে, সে অভিযোগ করে, সিবিআই–‌কে সরকার পরিচালনা করে। আবার যে যখন সরকারে থাকে, সে বলে, আইন আইনের পথেই চলবে। বছরের পর বছর এই চিত্রনাট্য দেখে দেখে সাধারণ মানুষ ক্লান্ত।
সর্বশেষ অশ্বডিম্বের নাম টু জি স্পেকট্রাম। ১৯ জন অভিযুক্তই বেকসুর খালাস। কারও বিরুদ্ধে কোনও প্রমাণই নাকি তুলে ধরতে পারেনি সিবিআই। বছরের শেষ লগ্নে এসে বছরের সেরা রসিকতাটা উপহার দিল সিবিআই। আদালত প্রমাণ পাক বা না পাক, সবাই জানেন কী হয়েছে। পাড়ার পাঁচুগোপালকে তদন্তের ভার দিলে সেও কিছু না কিছু প্রমাণ ঠিক জোগাড় করত। কিছু না পারলে অন্তত পেঁদিয়ে স্বীকারোক্তি আদায় করত। সিবিআই সেটুকুও পারে না।

kanimozi
বরং সিবিআই এর অপদার্থতা সার্টিফিকেট হিসেবে কাজ করছে। বুক ফুলিয়ে সেই দুর্নীতিবাজরা বলে বেড়াতে পারছে, সিবিআই তো এত চেষ্টা করল। কিছু প্রমাণ করতে পারল?‌ ব্যাস, শুরু হয়ে যাচ্ছে মিষ্টি বিলি। ফুলের মালা হাতে অনুগামীরা তো রেডি আছেই। ‘‌বেকসুর খালাস’‌ লোকেরাও দিব্যি নির্লজ্জের মতো সেই মালা গলায় পরে নিচ্ছেন। যেন দেশকে বিরাট এক সম্মান এনে দিলেন। যেন ভারতকে বিশ্বকাপ জিতিয়ে ফিরছেন বা সততায় নোবেল প্রাইজ জিতে ফিরছেন।
যদি কোনও তদন্ত না হত, তাহলে অন্তত কানিমোঝি বা এ রাজারা মাথা নিচু করে ঘুরত। তারা জানত, প্রমাণ থাক বা না থাক, পাবলিক বুঝে গেছে, তারা অপরাধী। কিন্তু এতে তারা গলা ফুলিয়ে বলতে পারছে, সততা নিয়ে লেকচার দিতে পারছে। তাদের দেখে বাকিরাও ভাবছে, ঠুঁটো জগন্নাথ সিবিআই–‌এর কোনও মুরোদ নেই। দুর্নীতি করলেও কেউ কিচ্ছু করতে পারবে না। সিবিআই হয়ে উঠছে অপরাধীদের ভরসার ঠিকানা।
যুক্তি–‌পাল্টা যুক্তি চলবে। কাদা ছোড়াছুড়িও চলবে। কিন্তু সাধারণ মানুষ নির্বাক দর্শক। তারা বড়জোর কাগজ পড়ে বা টিভির বিতর্ক দেখে পাড়ার চায়ের দোকানে একটু গুলতানি করবেন। একদল দায়ী করবে কংগ্রেসকে। একদল দায়ী করবে বিজেপি–‌কে। কিন্তু সিবিআই নিয়ে প্রশ্ন উঠবে না। কংগ্রেস বা বিজেপি–‌কে দোষারোপ পরে করবেন। এমনকী রাজা বা কানিমোঝিদেরও ক্ষমা করা যায়। কিন্তু সিবিআই নামক যে অপদার্থ প্রতিষ্ঠানটি আমার–‌আপনার করের টাকায় পোষা হচ্ছে, তার কি সত্যিই কোনও যুক্তি আছে।
কানিমোঝিদের বিচার পরে হবে। কতকিছুই তো উঠে গেল। এবার সময় এসেছে, সিবিআই নামক প্রতিষ্ঠানটাকেই তুলে দেওয়া হোক।

Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.