সুমিত চক্রবর্তী
পাহাড় নিয়ে আমরা কতই না উদ্বিগ্ন। পাহাড়ে কবে শান্তি ফিরবে, পর্যটকরা যাচ্ছেন কিনা, আমাদের যেন চিন্তায় ঘুম নেই। কাগজে রোজ বিমল–বিনয়দের কাজিয়া। ম্যালে পর্যটকরা ঘুরে বেড়াচ্ছেন। পায়রাগুলো হাজির চাল খেতে। এমন কত ছবি রোজ ছাপা হচ্ছে। কিন্তু ডুয়ার্স নিয়ে কোনও কাগজেই তেমন মাথাব্যথা নেই।
অথচ, ডুয়ার্সের পর্যটন একেবারে ভয়ঙ্কর সংকটের মুখে দাঁড়িয়ে। পরিবেশ আদালতের নির্দেশ বক্সার ভেতর সমস্ত অবৈধ নির্মাণ ভেঙে ফেলতে হবে। রাজাভাতখাওয়া থেকে জয়ন্তী, বক্সা পাহাড় থেকে শুরু করে নানা জায়গায় যত হোটেল, রিসর্ট আছে, সব ভেঙে ফেলতে হবে। সরকারি বনবাংলোয় এর মধ্যেই বুকিং বন্ধ হয়ে গেছে।
পাহাড় অশান্ত হওয়ায় অনেক পর্যটক ভেবেছিলেন ডুয়ার্সে যাবেন। কিন্তু সেখানেও যাওয়ার উপায় নেই। হোটেল মালিকরা সুপ্রিম কোর্টে যাবেন কিনা, সুপ্রিম কোর্ডট স্থগিতাদেশ দেবে কিনা, সে পরের প্রশ্ন। আপাতত সরকারি হোটেলে বুকিং বন্ধ। বেসরকারি হোটেলও বুকিং দিতে ইতস্তত করছে। শোনা যাচ্ছে, এই রায় লাটাগুড়ি, জলদাপাড়া, গরুমারা— এসব জাতীয় উদ্যান এলাকার ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।
বাঙালির পাহাড় এখনও থমথমে। জঙ্গলও কি মুখ ফিরিয়ে নেবে? তাহলে উত্তরবঙ্গের অর্ধেক আকর্ষণই তো চলে যাবে। অথচ, এসব নিয়ে সরকারের বা সমতলের বাঙালিদের তেমন মাথাব্যথা আছে বলে মনেও হয় না। গত কয়েকদিনে অনেকের সঙ্গে কথা বলে বুঝেছি, ডুয়ার্সের এই নিষেধাজ্ঞার কথা তাঁরা জানেনও না। বাংলা মিডিয়ায় গত পনেরো দিনে এই জাতীয় কটা প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে, মনে করে দেখুন। আসলে, পর্যটনের কতবড় ক্ষতিটা হয়ে গেল, আমরা বুঝতেও পারছি না।