‘‌চাচা’‌ নেই, রাজনীতিতে ভদ্রতা যেন আরও ফিকে হয়ে গেল

 

gyan sing2

বেঙ্গল টাইমস প্রতিবেদন:‌

রাজনীতি থেকে ভদ্রতা, সৌজন্য একটু একটু করে ফিকে হয়ে আসছে। এবার আরও ফিকে হয়ে গেল। চলে গেলেন জ্ঞান সিং সোহনপাল। বাংলার রাজনীতিতে চাচা নামেই বেশি পরিচিতি। বিধানসভার ইতিহাসে যদি ‘‌সর্বজনশ্রদ্ধেয়’‌ বলে সত্যিই কেউ থেকে থাকেন, তবে তিনি জ্ঞান সিং সোহনপাল। সিদ্ধার্থশঙ্কর রায় জমানায় ছিলেন রাজ্যের পরিবহনমন্ত্রী। জীবনের বেশিরভাগ সময়টাই কেটেছে বিরোধী বেঞ্চে। যখনই আইনগত কোনও সংকট তৈরি হত, স্পিকার হাসিম আব্দুল হালিম পরামর্শ চাইতেন এই মানুষটির। খড়্গপুরের এই প্রবীণ বিধায়ক দলমতের ঊর্ধ্বে উঠে নতুন দিশা দেখাতেন বিধানসভাকে। অনেকক্ষেত্রেই তাঁর পরামর্শকে কার্যত নির্দেশ হিসেবে মেনে নেওয়া হয়েছে।
খড়্গপুরের কংগ্রেস যে সাংগঠনিকভাবে দারুণ শক্তিশালী, এমন নয়। জিতেছেন মূলত নিজের ক্যারিশ্মায়। গতবছর ত্রিমুখী লড়াইয়ে হেরেছেন বিজেপি–‌র দিলীপ ঘোষের কাছে। জেতার পরই চাচার আশীর্বাদ নিতে তাঁর বাড়িতে ছুটে গিয়েছিলেন দিলীপ ঘোষও।
কথা বলতেন ভাঙা ভাঙা বাংলায়। কখনও হিন্দি বা ইংরাজিতে। যখনই সভায় ঢুকতেন মাথা নিচু করে ঢুকতেন। নিজের আসনে বসার আগে অধ্যক্ষের চেয়ারের দিকে তাকিয়ে আরও একবার নত হতেন। এই সৌজন্য, এই শিষ্টাচারকে একটি দিনের জন্যও হারিয়ে ফেলেননি। পরিচিত কাউকে দেখলেই মৃদু হাসি। কখনও রেগেছেন, এমন দৃশ্য মনে করা কঠিন। বয়স হয়েছিল ৯২। বয়সজনিত নানা সমস্যায় ভুগছিলেন। মঙ্গলবার এল তাঁর মৃত্যুর খবর। দেহ আনা হল বিধানসভায়। সিদ্ধান্ত হল, রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় হবে শেষকৃত্য। এই গান স্যালুট সত্যিই তাঁর প্রাপ্য ছিল। ভদ্রতার এক প্রতিমূর্তি যেন চিরকালের জন্য হারিয়ে গেল। ‌

sejuti-banner

Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.