রজত সেনগুপ্ত
একটা জল্পনা হাওয়ায় উড়লেই হল। তাকে বাঙালি কোথায় যে পৌঁছে দেবে, সে নিজেও জানে না। আর আনন্দবাজারে যদি বেরিয়ে যায়, তাহলে তো আর দেখতে হচ্ছে না। রঙ চড়িয়ে, আরও কয়েক ধাপ এগিয়ে, গুজবের ডালপালা ছড়িয়ে যাবে নিজের নিয়মেই।
আবার চর্চায় মুকুল রায়। তিনি নাকি বিজেপিতে যেতে পারেন। আমি তৃণমূলের ঘনিষ্ঠ কেউ নই। দলীয় সূত্রে কোনও গোপন খবরও আমার কানে আসে না। কাগজ পড়ি। টিভি দেখি। সেখান থেকে নিজের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে কিছুটা বোঝার চেষ্টা করি। যেটুকু নেওয়ার, ছেঁকে নিতে পারি।
আমার দৃঢ় বিশ্বাস, মুকুল রায় মোটেই বিজেপিতে যাবেন না। আলাদা দল গড়তেও যাবেন না। তৃণমূল ভাঙার চেষ্টাও করবেন না। আর দশজন রাজনীতিবিদের সঙ্গে মুকুল রায়ের তফাত আছে। তিনি নিজের সীমাবদ্ধতা বোঝেন। অধিকাংশ লোকই এই সীমাবদ্ধতা বোঝেন না। তাঁরা ভাবেন, তাঁরা বোধ হয় অনেক কিছু করতে পারেন। আসলে, তেমন কিছুই পারেন না।
অরুণ জেটলির সঙ্গে বৈঠক থেকে এত জল্পনা। তিনি মমতা ব্যানার্জির অনুমতি না নিয়ে জেটলির সঙ্গে বৈঠক করতে গিয়েছিলেন? একথা বিশ্বাস করেন? তিনি দলনেত্রীকে জানিয়েই গিয়েছিলেন। এমনকী যদি দলনেত্রীর নির্দেশে যান, তাহলেও অবাক হওয়ার কিছু নেই। কারণ কী কী থাকতে পারে, সেটা বরং অনুমান করতে পারেন।
বছর দুই আগে, একবার তিনি হয়ত ভিন্ন কিছু করার চেষ্টা করেছিলেন। বুঝেছিলেন, পায়ের তলার মাটি তেমন শক্ত নয়। দলের মূলস্রোত ছেড়ে তেমন কেউই আসবেন না। বিভিন্ন ব্লকের কিছু ‘নিস্ফলের, হতাশের দলে’ থাকা নেতা হয়ত আসবেন। তাঁদের দিয়ে কিছুই হবে না। কত চেনামুখ তখন মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। এখনও বিধানসভা ভোট সাড়ে তিন বছর দূরে। এখন কোনও বড় নেতা দল ছাড়ার ঝুঁকি নেবেন? তাছাড়া, বিজেপি যতই লাফালাফি করুক, ভোটের হিসেবে অনেক পিছিয়ে। তৃণমূলের থেকে তো বটেই, এমনকী বামেদের থেকেও। পঞ্চায়েতেই সেটা আরও ভাল করে বোঝা যাবে।
এই সহজ বিষয়টা আমি–আপনি বুঝি। মুকুল রায় বোঝেন না?