শুভ্রাংশু মহাপাত্র
বেঙ্গল টাইমস আমার খুব প্রিয় একটি সংবাদপত্র। আমি নিয়মিত পড়ি। বাংলার বাইরে থাকি। ইন্টারনেটে বাংলার টুকটাক খবর পেয়েই যাই। কিন্তু খবরের আড়ালেও তো অনেক কিছু থেকে যায়। বেঙ্গল টাইমস যেন সেই অভাব মিটিয়ে দেয়। নতুন ভাবনার খোরাক এনে দেয়।
স্বীকার করতে দ্বিধা নেই, আমি একজন বামপন্থী। ছাত্রাবস্থায় এসএফআই করেছি। এখনও বামপন্থীদেরই ভোট দিই। আজীবন তাই দিয়ে যাব। কিন্তু অনেক ব্যাপার মন থেকে মেনে নিতে পারি না। পার্টি নেতারা আমার থেকে অনেক বেশি বিচক্ষণ। কিন্তু আমরা কম বুঝি বলেই হয়ত মনের মধ্যে অনেক প্রশ্ন জাগে।
বেঙ্গল টাইমসকে ভাল লাগে সত্যি কথাটা স্পষ্ট করে বলে, তাই। বামেদের পক্ষে অনেক লেখাই থাকে। তবে গঠনমূলক সমালোচনাটাও জরুরি। সেটাও পাই। গৌতম দেবকে নিয়ে লেখাটির সঙ্গে আমি একমত। চারিদিকে অশিক্ষার প্রতিযোগিতা। ও খারাপ, তাহলে আমার খারাপ হতে বাধা কোথায়–এটাই যেন যুক্তি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বাম রাজনীতির আরও বেশি সর্বনাশ করেছে এই সোশাল মিডিয়া। সবাই ভাবছেন, ফেসবুকে দু–একটা মন্তব্য করে দিলাম। দারুণ বিপ্লব করে দিলাম। এতে যে পার্টির ভাবমূর্তি ভাল–র থেকে খারাপ বেশি হচ্ছে, সেটা অনেকে বুঝতেই পারছেন না। আমি একটা সহজ কথা বুঝি, খারাপ কাজে সমালোচনা যদি নাও করতে পারি, অন্তত সমর্থন করব না। কোনও সন্দেহ নেই, গৌতম দেব সেদিন যে মন্তব্য করেছেন, একজন বাম নেতার কাছে তা আশা করা যায় না। প্রকাশ্যে তাঁর সমালোচনা হয়ত করলাম না। এড়িয়ে গেলেই তো হত। বাম কর্মীরা যেন দায়িত্ব নিয়ে নিলেন এই মন্তব্য প্রচারের। এই জাতীয় মন্তব্যগুলো বেশি প্রচার পেলে দলের আরও ক্ষতি হয়। এটা এই নব্য বুদ্ধিজীবীকূল বোঝেন না?
আমিও সোশাল মিডিয়ায় মাঝে মাঝে চোখ রাখি। গৌতম দেবের সমর্থনে কুযুক্তি দেখে আমারই খুব রাগ হচ্ছিল। এরা কারা? এরা বামপন্থাকে আদৌ ভালবাসে তো? এদের রাজনৈতিক চেতনা আছে তো? মমতাকে কুরুচিকর আক্রমণ করলে বামেদের প্রতি আস্থা ফিরে আসবে না। নিজেদেরকে গ্রহণযোগ্য হতে হবে। আমরা, যাঁরা নিজেদের বামপন্থী বলে মনে করি, তাঁরা নিজের বাড়িতে, পাড়ায়, ক্লাবে, অফিসে, স্কুলে আদৌ গ্রহণযোগ্য তো? আমাদের মানুষ বিশ্বাস করে তো? নইলে আমি যতই প্রচার করি, সেটা ব্যুমেরাং হয়ে দাঁড়ায়।
বাম নেতৃত্বকে ধন্যবাদ। দেরিতে হলেও তাঁরা ভুলটা বুঝতে পেরেছেন। আশা করব, আগামীদিনে এটা মেনে চলা হবে। সস্তা জনপ্রিয়তা ও হাততালির লোভে আমরা যেন নিজেদের দায়িত্ব ভুলে না যাই।
(ওপেন ফোরামে আপনিও মতামত পাঠাতে পারেন। ঠিকানা: bengaltimes.in@gmail.com)


