মৃন্ময় নাথ
কলকাতা পুলিশের কাণ্ড কারখানা যত দেখছি, ততই অবাক হচ্ছি। প্রায় রোজ নিয়ম করে আদালতের কাছে তিরস্কার শুনতে হচ্ছে। তবু সেই একই কাজ করে চলেছে। প্রতিদিন ধারাবাহিকভাবে নিজেদের বিশ্বাসযোগ্যতা হারাচ্ছে। কলকাতা পুলিশ নিজেদের ভাবমূর্তিকে এমন জায়গায় নিয়ে যাচ্ছে, তারা তদন্ত করতে গেলেই সন্দেহ হচ্ছে, নিশ্চয় কোনও মতলব আছে।
এবার তাঁরা পড়েছেন অ্যালকেমিস্ট নিয়ে। এমনটা হওয়ারই ছিল। ম্যাথু স্যামুয়েল বলে ফেলেছেন, স্টিং অপারেশনের টাকা দিয়েছিলেন কে ডি সিং। ব্যাস, আর যায় কোথায়। এবার কে ডি সিং মশাই বুঝুন পুলিশি তৎপরতা কাকে বলে। কুণাল ঘোষ যতদিন মুখ খোলেননি, ততদিন তিনি সম্পদ ছিলেন। যেদিন রক্তদান শিবিরে গিয়ে দু–চারটি সত্যি কথা বলে ফেললেন, সেদিন থেকে তিনি চক্ষুশূল। যতরকম মামলা দেওয়া যায়, দিয়ে দেওয়া হল।
সেই তিন বছর আগে সুদীপ্ত সেন ধরা পড়েছেন। সবাই জানতেন, অ্যালকেমিস্টও বাজার থেকে টাকা তুলত। তার পরেও টাকা তুলে গিয়েছে। কোনও ব্যবস্থা হয়নি। কারণ, কুণালের মতো তাঁকেও রাজ্যসভায় পাঠিয়েছে শাসকদল। যেই জানা গেল, স্টিং অপারেশনের পেছনে এই চিটফান্ডের কর্তা, অমনি নানারকম মামলা গজিয়ে উঠল। এবার ধরপাকড় শুরু হবে। হয়ত কেডি সিংকেও ধরা হবে। তারপর আবার বলা হবে, চিটফান্ড সিপিএমের আমলে তৈরি। সবিনয়ে জানতে ইচ্ছে করে, কেডি সিংকে রাজ্যসভায় কে পাঠাল?
এতদিন পুলিশ কেডি সিংয়ের কোনও দোষ দেখতে পায়নি। এবার পাবে। কেডি সিং দারুণ বক্তা, এমন নয়। রাজ্যসভায় দারুণ ভূমিকা পালন করেছেন, তাও নয়। কেন তাঁকে দলে নেওয়া হয়েছে, কেন রাজ্যসভায় পাঠানো হয়েছে, কীসের বিনিময়ে, সেই তথ্য সামনে আসা দরকার। পুলিশের ওপর সত্যিই আস্থা হারিয়ে যাচ্ছে। এই সহজ সত্যিটা পুলিশ কর্তারা নিজেরা বুঝছেন না?
কেডি এখন সত্যিই খুব খারাপ। আর যাঁরা সব জেনেও তাঁকে রাজ্যসভায় পাঠালেন, তাঁরা খুব ভাল।