বঙ্গীয় কালিদাসরা কবে যে বুঝবেন!

              মৌতান ঘোষাল

 

বাংলার টেবিলটেনিস নিয়ে সর্বভারতীয় টেবিলটেনিস সংস্থার নির্লজ্জ অভিভাবকত্ব আরও একবার সামনে চলে এল জাতীয় গেমসের দল পাঠানো নিয়ে। জাতীয় গেমস মুলত ইন্ডিয়ান অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের টুর্নামেন্ট। সর্বভারতীয় সংস্থাই রাজ্যগুলিকে আহ্বান জানায় বিভিন্ন খেলায় তাদের নিজেদের দল পাঠাতে। সেক্ষেত্রে দল নির্বাচনের দায়িত্বে থাকে রাজ্য অলিম্পিক সংস্থাগুলি। সংশ্লিষ্ট খেলার রাজ্যসংস্থাগুলি রাজ্য অলিম্পিক সংস্থাকে সাহায্য করে দল তৈরি করতে। এখানেও যাবতীয় ডিসিপ্লিনের দল বাছাই করে তাদের ছাড়পত্র দেওয়ার দায়িত্ব বেঙ্গল অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের। অন্য সব খেলায় সেই নিয়মই মানা হচ্ছে। কিন্তু টি টি এফ আই সে নিয়ম মানবে কেন? বাংলার টেবিলটেনিসর সব ব্যাপারে মাথা গলানো যে তাদের পুরন অভ্যেস।

tt2

কদিন আগেই হঠাৎ ডব্লিউ বি টি টি এ এবং এন বি টি টি এ কে চিঠি পাঠিয়েছে সর্বভারতীয় সংস্থা। যাতে রয়েছে তাদের পছন্দের বাংলা দল। এবং জানানো হয়েছে মূলত এই দলই যেন যায় কেরালা জাতীয় গেমসে অংশ নিতে। বি টি টি এ তাদের অনুমোদিত সংস্থা নয় তাই বেঙ্গল টেবিলটেনিস সংস্থার খেলোয়াড় যাতে কোনভাবেই দলে ঢুকতে না পারে তার জন্যই এই তড়িঘড়ি ব্যবস্থা। বাংলার প্রাচীনতম টেবিলটেনিস সংস্থার অনুমোদন অন্যায়ভাবে টি টি এফ আই বাতিল করলেও স্বাভাবিকভাবেই বি ও এ’র একমাত্র অনুমোদিত সংস্থা বি টি টি এ। কাজেই জাতীয় গেমসের জন্য বি ও এ’র তৈরি দলে যে বি টি টি এ’র  খেলোয়াড়রা ট্রায়ালে সুযোগ পেলে থাকবেন এটাই স্বাভাবিক। এছাড়া জাতীয় গেমসের জন্য যে কোনও খেলার রাজ্যদল নির্বাচনের ক্ষেত্রে সেই খেলার সর্বভারতীয় সংস্থার হস্তক্ষেপ করার কোন অধিকারই নেই। তার সত্ত্বেও নিজেদের মনোনীত খেলোয়াড়দের তালিকা পাঠিয়েছে টি টি এফ আই। নির্লজ্জতা ছাড়া একে আর কী বা বলা যায়? এই তালিকায় আবার আছে সুতীর্থা মুখার্জি, সৌরভ চক্রবর্তীর মত খেলোয়াড়দের নাম। সুতীর্থাকে জাতীয় টিটি’র সময় টি টি এফ আই কর্তারা নিজেরাই অন্যাভাবে সাসপেন্ড করেছিলো। আর সৌরভ বাংলা টেবিলটেনসে বঞ্চনার শিকার হয়ে বাংলা ছেড়েছেন অনেকদিন হয়ে গেছে। সে তথ্যও জানা নেই সর্বভারতীয় নিয়ামক সংস্থার।

 

এমন ঘটনায় কিছুটা হলেও দোটানায় পড়েছে বি ও এ। কারন তাদের অনুমোদিত সংস্থা বি টি টি এ’র আপাতত একটাই চাহিদা খেলোয়াড়দের জাতীয় র‍্যাঙ্কিং অনুযায়ী বেছে নিক বি ও এ, কিন্তু কোচ এবং ম্যানেজার হবে বি টি টি এ’র পছন্দ অনুযায়ী। শোনা যাচ্ছে রাজ্য অলিম্পিক সংস্থার কর্তারা তাই নাকি খেলোয়াড়দের সঙ্গে কথা বলেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা ভাবছেন কোচ ম্যানেজারের ব্যাপারে। এখন দেখার কেরালায় জাতীয় দলের দায়িত্ব নিয়ে শেষপর্যন্ত কারা যান।

বাংলার টেবিলটেনিসকে ত্রিধাবিভক্ত করে জাতীয় পর্যায়ের প্রতিযোগিতায় পদকে বাংলার একাধিপত্ত ১০ বছর আগেই শেষ করেছে টি টি এফ আই। পরিকাঠামো থেকে শুরু করে খেলার মানের উন্নতিতে এক্সপোজার ট্রিপের ক্ষেত্রে যদি এই বাড়তি অভিভাকত্ব দেখাতেন সর্বভারতীয়ত সংস্থার কর্তারা তাহলে সত্যিই তা ইতিবাচক বলে মেনে নেওয়া যেত। কিন্তু এক্ষেত্রে যে উদেশ্যটাই খারাপ। কবে যে বুঝবেন বাংলা টেবিলটেনিসের কর্তারা!

 

 

 

Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.