শান্তনু বটব্যাল
এই সরকার যে কী করতে চাইছে, বোঝা যায় না। শিক্ষা নিয়ে রীতিমতো ছেলেখেলা চলছে। একেকদিন একেক রকম নিয়ম। নিজেরাই নিয়ম করছে। আবার বদল করছে। কোন নিয়ম চালু করলে কী সমস্যা হতে পারে, তা নিয়ে এদের কোনও ধারনাই নেই।
শিক্ষামন্ত্রী হঠাৎ সিদ্ধান্ত নিলেন, সব কলেজে নাকি ফ্রি ওয়াই ফাই চালু হবে। এতে যে শিক্ষার কতবড় ক্ষতি হবে, একবরা ভেবেও দেখলেন না। আসলে এরা পথে ঘাটে বেরোন না, মেট্রোয় চড়েন না, বাসে চড়েন না, স্কুল কলেজের পরিবেশও জানেন না। এই সময়ের ছেলেমেয়েরা কীরকম নেট অ্যাডিক্টেড, এটা মন্ত্রীরা বোঝেন না।
এমনিতেই মোবাইল থেকে মুখ তুলে তাকায় না। এরপর যদি ফ্রি ওয়াইফাই হয়ে যায়, তাহলে আর দেখতে হচ্ছে না। ক্লাসে ছেলে পাওয়া যাবে না। সেদিন বেঙ্গল টাইমসে এক মাস্টারমশাইয়ের লেখা পড়ছিলাম। তাঁর কথার সঙ্গে আমি একেবারেই একমত। কলেজে ওয়াই ফাই চালু করলে লেখাপড়ার বারোটা বেজে যাবে। যারা বলছেন, অন্য ইউনিভার্সিটির বই পড়বেন, তারা আগে নিজেদের পড়ার বইগুলো ভালভাবে পড়ুন। কলেজের লাইব্রেরিতে অনেক বই আছে। আগে সেগুলো দেখুন। সারাজীবনে কলেজ লাইব্রেরি থেকে কোনও বই তুলেছে কিনা সন্দেহ। তারা আবার বিদেশি বই পড়বে। একটা প্রবাদ মনে পড়ে যাচ্ছে- দুরাত্মার ছলের অভাব হয় না।
এতবড় একটা সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে শিক্ষামন্ত্রী তো আলোচনা করতে পারতেন। তাহলে বুঝতে পারতেন এতে কী সমস্যা হতে পারে। আমার ধারনা, অধিকাংশ শিক্ষক বা শিক্ষাদরদী মানুষ এতে সায় দিতেন না। কিন্তু শিক্ষামন্ত্রী সেসব বোঝেন বলে মনে হয় না। তিনি চমক দিতে পারলেই খুশি।
আমার মনে হয়, ফ্রি ওয়াই ফাই নয়। যদি সত্যিই লেখাপড়ার পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে হয়, তাহলে কলেজে মোবাইল নিয়ে ঢোকা আগে বন্ধ করা দরকার। কথাগুলো শুনতে খারাপ লাগবে। অনেক ছাত্রবন্ধু হয়ত ভুল বুঝবেন। আশা করি শিক্ষকরা একমত হবেন।
(এটি ওপেন ফোরামের আলোচনা। এই বিষয়ে শিক্ষক ও ছাত্ররা তাদের মতামত পাঠাতে পারেন। ফ্রি ওয়াই ফাইয়ের বিষয়টি কলেজের পক্ষে ভাল নাকি মন্দ। এতে লেখাপড়ার কতটা উন্নতি হতে পারে? এই নিয়ে আরও বিতর্ক হওয়া প্রয়োজন। খোলা মনে নিজের মতামত মেলে ধরুন বেঙ্গল টাইমসের পাতায়। লেখা পাঠানোর ঠিকানাঃ bengaltimes.in@gmail.com )