ক্ষমা চাইছি
বাচ্চাদের সামলানো বেশ কঠিন। ব্যাটাদের মাথায় কী যে দুষ্টু বুদ্ধি! পড়াতে গিয়ে হাড়েহাড়ে টের পেয়েছি। কখনও বুঝতে চাইত না। আবার কখনও বুঝলেও উল্টোপাল্টা উত্তর দিত। আমি তখন পাড়ার কযেকজন বাচ্চা ছেলেকে পড়াতাম। ঠিক করেছিলাম, ওদের মারব না। কিন্তু দিন দিন ওদের অত্যাচার বেড়েই চলল।
তখন ঠিক করলাম, ব্যাটাদের একটু অন্যরকম শাস্তি দিতে হবে। এক জগ জল আর কয়েকটা লঙ্কা নিয়ে বসতাম। একজন পড়া পারল না। তাকে ধমক দিয়ে বললাম, এই লঙ্কাটা খা, নইলে মার খাবি। সে বেচারা লঙ্কা খেয়ে হু–হা করতে লাগল। আরেকজনকে বললাম, জগের জলটা খেয়ে শেষ কর। সেও ভয়ে সব জল খেয়ে নিল। এখন তারা মাধ্যমিক পাস করে গেছে। মাঝে মাঝেই দেখা হয়। ওরা হয়ত ভুলে গেছে। কিন্তু ওদের দেখলেই লঙ্কা খাওয়া সেই অসহায় মুখটা মনে পড়ে। ওদের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। সেদিন ওদের এমন নির্মম শাস্তি না দিলেই ভাল করতাম।
অঞ্জলি রাউত, চন্দননগর
(ফেলে আসা জীবনে এমন অনেক ঘটনা থাকে, যার রেশ থেকেই যায়। মাঝে মাঝেই একটা অপরাধবোধ তাড়া করে। এই বিভাগ হল পাঠকদের মুক্তমঞ্চ। সেইসব ভুল স্বীকার করার মঞ্চ। স্বীকার করে দেখুন, অনেক হালকা লাগবে।)