কবেকার কলকাতা পুরনো শহরে

ইন্দ্রাণী রাহা

কাকে ধরা বেশি কঠিন ? অপরাধী না সময় ? দুজনের কাজ দুরকম। ব্যোমকেশ বক্সীর কাজ অপরাধীকে ধরা। আর দিবাকর বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনেকদিনের ফেলে আসা শহরটাকে ধরা। ব্যোমকেশকে মগজাস্ত্রে যত না শান দিতে হয়েছে, দিবাকরকে দিতে হয়েছে ঢের বেশি। ভাবনার সঙ্গে মেলাতে হয়েছে নস্টালজিয়া। যে সময়টাকে নিজেই দেখেননি, সেই সময়টাকে ধরার আপ্রাণ চেষ্টা।

শহরের নানা মাল্টিপ্লেক্সে রমরমিয়ে চলছে ডিটেকটিভ ব্যোমকেশ বক্সী। সেই উত্তর কুমার থেকে শুরু। ছোট পর্দায়, বড় পর্দায় কত ব্যোমকেশ হয়ে গেল! এখনও দিব্যি চলছে। বাঙালি তো বহুদিন ধরে চেনে। রজিত কাপুরের সৌজন্যে নয়ের দশকে দেশের নানা প্রান্তে পৌঁছে গিয়েছিলেন ব্যোমকেশ। এবার সিনেমার হাত ধরে।

byomkesh2

দিবাকর বেছে নিয়েছিলেন চারের দশককে। সেই সময়ের কলকাতাকে। কীভাবে আঁকলেন সেই সময়ের ছবি ? পরিচালকের মুখেই শোনা যাক – ‘কলকাতার ইতিহাস নিয়ে যাঁরা কাজ করেন, এমন অনেকের সঙ্গে কথা বলেছি। বিভিন্ন লাইব্রেরি ঘেঁটে সেই সময়ের  নানা ছবি দেখেছি। সেই সময়ের পোশাক থেকে রাস্তাঘাট, যানবাহন- নানা বিষয়ের উপর একধরনের রিসার্চ করেছি। যেসব বইয়ে সেই সময়ের কথা আছে, সেই সব বই পড়েছি। তারপর সেই সময়ের শহরটাকে মনে মনে ভাবার চেষ্টা করেছি। ছবিতে সেটাই আনার চেষ্টা করেছি। শরদিন্দুবাবু যে মেসে থাকতেন, অনেক চেষ্টা করে সেটা খুঁজে পেয়েছিলাম। ইচ্ছে ছিল, সেখানেই শুটিং করার। কিন্তু নানা কারণে তা সম্ভব হয়নি। মুম্বইতে একইরকম সেট বানানো হয়েছিল।’

মূল কাহিনীর সঙ্গে ছবির নাকি অনেক ফারাক ? পরিচালকের উত্তর, ‘হ্যাঁ, কিছুটা ফারাক আছে, এটা ঘটনা। শরদিন্দুবাবু যখন ব্যোমকেশ লিখছেন, তখন তিনি কিন্তু বঙ্কিমচন্দ্রের ভাষা বা অন্য কারও ভাষা থেকে প্রভাবিত হননি। একেবারে নিজের স্টাইলে গল্প বলে গেছেন। নিজের মতো করে লিখে গেছেন। আমিও কাজ করতে গিয়ে কিছুটা আমার মতো করেই করেছি। আশা করি, তিনি দেখলে এই স্বতন্ত্রতাকে মেনে নিতেন। আসলে, আমি শুধু একটা ব্যোমকেশ বা একটা কাহিনী নির্ভর ছবি করিনি। অন্যান্য অনেক গল্প থেকেও উপাদান নিয়েছি। একটা ছবির মধ্যেই সার্বিকভাবে ব্যোমকেশকে তুলে ধরতে চেয়েছি। তাই শুধু একটা গল্পের সঙ্গে মিল‌ খুঁজলে ফাঁক থেকে যাবে।’

byomkesh3

নায়ক হিসেবে সুশান্ত রাজপুতকে অনেকেরই তেমন ভাল লাগেনি। দিবাকর একমত নন, ‘মুম্বইয়ের প্রতিক্রিয়া একেবারেই অন্যরকম। পুরো ভার ও একা বইতে পেরেছে। নিজের সেরা কাজটা করেছে। হিন্দি ছবির জগতে দারুণভাবে ছাপ ফেলল। সবাই এখন ওকে নিয়ে কাজ করতে চাইবে।

Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.