সরল বিশ্বাস
জানেন, একজনকে হন্যে হয়ে খুঁজছি। যদি একবার দেখা পেতাম, একটু পেন্নাম ঠুকে আসতাম।
সে কোনও নেতা-মন্ত্রী নয়, আমলা বা ফিল্মস্টার নয়। সে একটি পাতি মিস্টির দোকান চালায়। তার কিনা এত বড় সাহস, মুখ্যমন্ত্রীকে ফিরিয়ে দিয়েছে !
কী বলছেন ? বিরোধীদের কুৎসা ? না মশাই। স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী সেদিন বলেছেন, তাঁকে নাকি ধারে মিস্টি কিনতে হয়েছে। যাচ্ছিলেন জগদ্ধাত্রী পুজো উদ্বোধন করতে । ইচ্ছে হয়েছিল, ঠাকুরের জন্য মিষ্টি নিয়ে যাবেন। ওদিকে মোদিবাবু চক্রান্ত করে পাঁচশো টাকা, হাজার টাকা অচল করে দিলেন। যেন দিদিমণি মিস্টি কিনতে না পারেন।
কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর কাছে তো সব পাঁচশো আর হাজার টাকার নোট। ওদিকে দোকানদারও নাছোড়বান্দা। সে নাকি কিছুতেই পাঁচশো টাকার নোট নেবে না। মুখ্যমন্ত্রী বললেও নেবে না। তুমি কে হে বাপু ? মুখ্যমন্ত্রীকে মুখের উপর ‘না’ বলছ ? সাহস তো মন্দ নয় ।
বলি দোকান চালু রাখার ইচ্ছে আছে, না নেই ? যে মুখ্যমন্ত্রীর ভয়ে সব মন্ত্রী আমলারা থরহরি কম্পমান, তাঁকে কিনা এক মিস্টির দোকানদার ফিরিয়ে দিচ্ছে ? ভারি অন্যায়। তাঁর জন্য কিনা মুখ্যমন্ত্রীকে ধার নিতে হল ? সিপিএমকে না হয় রাজ্য চালাতে ধার করতে হয়েছে, তাই বলে দিদিমণিকে কিনা মিস্টি কিনতে ধার করতে হবে ? এই হতভাগাটার নামে একটা মানহানির মামলা ঠুকে দিলে কেমন হয় ?
কে সেই দোকানদার ? একটু খুঁজে বের করা যায় না ?
জানি, দেশে নিন্দুকের অভাব নেই। স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী বললেন। তারপরেও অনেকে বিশ্বাস করছেন না। ভাবছেন এমন কোনও দোকানদার নেই। যদি নাই থাকে, তাই বলে তাকে নিয়ে আলোচনা হবে না ? ফেলুদা, টিনটিন, বাঁটুল, টেনিদা অনেকেই তো নেই। তাই বলে তাঁদের নিয়ে আলোচনা হয় না ?
তেমনি ধরে নিন, সেই মিস্টির দোকানদারও আছে। আপনারা তাকে গালমন্দ করতেই পারেন। আমি বাপু তাঁকে একটা পেন্নাম করে আসব। এই রাজ্যে অন্তত একটা লোকের তো বুকের পাটা আছে।


