প্রশান্ত বসু
দুর্গাপুজো আসা মানেই একঝাঁক বাংলা ছবির মুক্তি। এমনটা আগেও ছিল। এখনও আছে। ফল কী হয়? পুজোর ব্যস্ততায় অনেক ছবিই দেখা হয় না। তারপর এক–দু সপ্তাহ যেতে না যেতেই হল থেকে নিঃশব্দে সেই ছবি ভ্যানিস হয়ে যায়।
পুজো এলেই তারকাদের মধ্যে, পরিচালকদের মধ্যে যেন একটা ইঁদুর দৌড়। কে কাকে টেক্কা দিলেন। এমনিতেই মাল্টিপ্লেক্সে বাংলা হল ছাগলের তৃতীয় সন্তানের মতো। মেরেকেটে একটি শো হয়তো বাংলা চলে। তাও দুপুরের ফাঁকা স্লটে। তার ওপর যদি একসঙ্গে পাঁচ–ছয়টি ছবি মুক্তি পায়, একটি বা দুটি হয়তো ঠিকমতো হল পায়। বাকিগুলো হয়তো দূরের কোনও হলে একটি বা দুটি শো চলছে। ফলে, ইচ্ছে থাকলেও সেইসব ছবি আর দেখা হযে ওঠে না। অথচ, এইসব ছবি কিন্তু গুণমানের নিরিখে বেশ উন্নত।
প্রযোজকদের অনুরোধ, সব ছবি একসঙ্গে দুর্গাপুজোয় না এনে কিছু ছবি পয়লা বৈশাখকে সামনে রেখে বাজারে আনা হোক। একসময় পয়লা বৈশাখেই অনেক ছবির শুভ মহরৎ হত। অর্থাৎ, শুটিং শুরু হত। পয়লা বৈশাখ উপলক্ষে অনেক ছবি মুক্তিও পেত। আবার যদি সেই প্রথা ফিরিয়ে আনা যায়, তাহলে ভালই হয়। পুজোর সময় ছুটি থাকে ঠিকই, কিন্তু সবাই চারদিন সিনেমা হলেই কাটাবেন, এতখানি আশা করাটা বাড়াবাড়ি। উৎসবের আবহ ছেড়ে লোকে সিনেমা দেখতে যাবেনই বা কেন? বরং পয়লা বৈশাখ উপলক্ষে যদি তিন–চারটি ভাল ছবি মুক্তি পায়, অনেকেই দেখতে পারবেন।
একবার বলিউডের দিকে তাকালেই বুঝতে পারবেন। আমির খান আর সলমন খানের ছবি একসঙ্গে মুক্তি পাচ্ছে, এমনটা দেখা যায়! শাহরুখ খানের ছবি আর অক্ষয় কুমারের ছবি একসঙ্গে পর্দায় আসে? দক্ষিণী কোনও বিগ বাজেটের ছবি এলেও বলিউডের অনেক প্রোডাকশন হাউস নিজেদের ছবির মুক্তি পিছিয়ে দেয়। কারণ, একটাই দর্শক যেন ভাগ না হয়ে যায়। আমরা কি এখান থেকে কিছুই শিখতে পারি না? এমনিতেই বাংলা ছবির বাজার তেমন ভাল নয়। তার ওপর যদি নিজেরাই তাকে আরও ছোট করে আনেন, তাহলে সেই বাজার আরও খারাপ হতে বাধ্য।