কুশল দাস
একদিকে মোহনবাগানের ক্রমাগত সাফল্য, অন্যদিকে ইস্টবেঙ্গলের লাগাতার ব্যর্থতা। এই একপেশে ফলে একজন ইস্টবেঙ্গল অনুরাগী হিসেবে কিছুটা যেন হতাশ হয়ে পড়েছিলাম। খেলায় হার–জিৎ থাকবে, সেটাই স্বাভাবিক। সব খেলায় জয় আসবে না, এটাও ঠিক। কিন্তু ডার্বি হলেই হারতে হবে, এটাই বা কেমন কথা? বেশ কয়েক বছর ধরেই বড় মাপের কোনও ট্রফি নেই। সুপার কাপের সান্ত্বনা নিয়ে কতদিন আর থাকা যায়?
অবশেষে স্বস্তি দিল কলকাতা লিগের ডার্বি। কলকাতা লিগ হোক আর যাই হোক, দুই প্রধান মুখোমুখি হওয়া মানেই অন্য একটা আবহ। কল্যাণীতে হওয়া এই ডার্বিকে ঘিরে উন্মাদনা ছিল ভালই। অবশেষে ইস্টবেঙ্গল জিতল। মোহনবাগানকে হারাল ৩–২ ব্যবধানে।
বিদেশি কোচদের মধ্যে একটা প্রবণতা দেখা যায়। তাঁরা ডার্বিকে কিছুটা যেন হেলাফেলার চোখেই দেখেন। ডার্বি মানে নিছক আরও একটা ম্যাচ, এর বেশি কিছু নয়— এরকম একটা হাবভাব দেখান। আসলে, ডার্বির উত্তাপ কী, তাঁরা বোঝেনও না। তাঁদের বোঝানোও হয় না। কর্তাদের মধ্যেও কলকাতা লিগকে হেলাফেলা করার একটা প্রবণতা দেখা যায়। যেন কলকাতা লিগ কিছুই নয়, জিতলে বা হারলে কিছুই যায় আসে না। ঘরোয়া প্রতিযোগিতাগুলো এই উপেক্ষা করতে গিয়ে ভারতীয় ফুটবল আজ কোন তলানিতে নেমে এসেছে, আমরা সবাই দেখছি। কলকাতা লিগের কতখানি গুরুত্ব আছে জানি না, তবে এটুকু বলতে পারি, এই ডার্বি জয় সমর্থকদের একটা বাড়তি অক্সিজেন দিল। ইস্টবেঙ্গল কোচকে ধন্যবাদ, তিনি অন্তত ডার্বিকে উপেক্ষা করেননি। ডার্বির গুরুত্ব বুঝেছেন। সিনিয়র দলের বেশ কয়েকজন ফুটবলারকে খেলিয়েছেন। সিনিয়র দলের কোচও আপত্তি করেননি।
হ্যাঁ, এটাই কলকাতা ফুটবলের পাল্স। এটাই সমর্থকদের অনুভূতি। বিনো জর্জ অন্তত জোর করে ‘এটা নিছক একটা ম্যাচ’— এমন আপ্তবাক্যের আশ্রয় নেননি। সমর্থকদের এই আবেগকে মর্যাদা দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ।
