তন্ময় ঘোষাল
বাঙালি নাকি ঘরকুনো। সে নাকি সুখী গৃহকোণ ছেড়ে বেরোতে চায় না। অথচ, বাঙালি কতটা ভ্রমণপ্রিয় জাতি, আরও একবার বোঝা গেল। যথারীতি ট্রেনের টিকিট হাউসফুল। এমনকী ওয়েটিং লিস্টেও জায়গা নেই।
আগকে নিয়ম ছিল, চার মাস আগে ট্রেনের টিকিট কাটা যেত। এখন চার মাস কমিয়ে দু’মাসে আনা হয়েছে। অর্থাৎ, ষাট দিন আগে টিকিট কাটা যাবে। আইআরসিটিসি অ্যাকাউন্টের সঙ্গে আধার কার্ড যুক্ত করা হয়েছিল। যেন ভুয়ো টিকিটে কিছুটা রাশ টানা যায়। কিন্তু তারপরেও দেখা গেল, দশ মিনিটের মধ্যে সব টিকিট শেষ।
যাঁর যেমন সামর্থ্য, তিনি সেই অনুযায়ী পরিকল্পনা করেন। কেউ হয়তো বিদেশে পাড়ি দিতে চান। কেউ সুদূর কাশ্মীর বা গোয়া। আবার যাঁদের ততখানি পকেটের জোর নেই, বা লম্বা ছুটি নেই, তাঁরা হয়তো উত্তরবঙ্গে যাওয়ার কথা ভাবেন। আপনি দক্ষিণ ভারতেই যান বা উত্তরবঙ্গে, এমনকী পাশের রাজ্যের পুরী। কোথাও আগাম টিকিট নেই। এমনকী ওয়েটিংয়ে কেটে অপেক্ষায় থাকবেন, তারও উপায় নেই। ঠাঁই নেই, ঠাঁই নেই। এখন উপায়? এবার ভলভো বাসের দিকে ঝুঁকে পড়া ছাড়া উপায় নেই। সেখানে আবার ভাড়ার কোনও নির্দিষ্ট চার্ট নেই। ঝোঁপ বুঝে তারাও কোপ মারতে নেমে পড়বে। যে টিকিট হয়তো আটশো বা ন’শো হওয়ার কথা, সেই টিকিটই দেখা যাবে দু’হাজার/আড়াই হাজারে বিক্রি হচ্ছে।
ট্রেনে জায়গা নেই, বাসে দ্বিগুন, তিনগুন ভাড়া, হোটেল ভাড়াও চার–পাঁচগুন। এরপরও মানুষ যাচ্ছেন। এর থেকেই বোঝা যায়, বাঙালি কতটা ভ্রমণ প্রিয় জাতি। বাঙালির থেকে আর্থিকভাবে সমৃদ্ধ জাতি হয়তো অনেক আছে। কিন্তু আর কেউ ভ্রমণকে এতখানি গুরুত্ব দেয় বলে মনে হয় না।
