সরল বিশ্বাস
আসল প্রশ্নটা শুরুতেই তোলা যাক, এত ম্যাড়মেড়ে বিদায় কি ঋদ্ধিমান সাহার প্রাপ্য ছিল? সৌরভ পরবর্তী ভারতীয় ক্রিকেটে বাংলার সবথেকে বড় তারকাকে? উত্তরটা নিয়ে কোনও দ্বিমত থাকার কথা নয়। সেই ঋদ্ধিমান সাহা বাংলার হয়ে শেষ ম্যাচ খেললেন, মাঠে কিনা একশোজন দর্শকও নেই! পুলিশ, সাংবাদিক বা মাঠকর্মীদের বাদ দিলে সংখ্যাটা সত্যিই একশোর কম।
আচ্ছা, সারা জীবনে ঋদ্ধিমানের কাছ থেকে ভারতের ম্যাচ বা আইপিএল ম্যাচের টিকিট নিয়েছেন কতজন? সেই সংখ্যাটা নিশ্চিতভাবে হাজারের ওপর। কত আত্মীয় গজিয়ে যায়! কত প্রতিবেশী গজিয়ে যায়! কত মানুষ ঋদ্ধিমানের সঙ্গে নিজের নাম জুড়ে দিয়ে টিআরপি বাড়িয়েছেন। কত হাজার হাজার মানুষ ঋদ্ধিমানের সঙ্গে সেলফি তোলার সময় দাঁত কেলিয়ে বলেছেন, আমি আপনার ফ্যান। আজ তাঁরা কোথায়? তাঁদের কেউ একবার মাঠে আসার প্রয়োজন মনে করলেন না!
সোশ্যাল মিডিয়ায় ঋদ্ধিমান তেমন সক্রিয় না হলেও তাঁর স্ত্রী প্রবল সক্রিয়। সাম্প্রতিককালে ঋদ্ধিমানকে ঘিরে যত খবর হয়েছে, অধিকাংশ খবররে উৎস হল ঋদ্ধিমান–ঘরনির পোস্ট। কত লাইকের বন্যা বয়ে যায়। কত ফলোয়ার। কিন্তু আসল দিনে তাঁদের কজন মাঠে এলেন! এক সময় বোরিয়া মজুমদার বলেছিলেন, ঋদ্ধিমান সাহার এত লক্ষ লক্ষ ফলোয়ার। সেই কারণেই বোর্ড নাকি ঋদ্ধিমানের পক্ষে রায় দিয়ে সাংবাদিককে শাস্তি দিয়েছে। সেটা যে কত বড় ভুল ব্যাখ্যা, তা ফের বোঝা গেল। এত যদি ফলোয়ার, তারা এমন দিনে মাঠে এল না কেন?
কেন সিএবি কর্তারা এতখানি উদাসীন রইলেন, কেন মাঠে লোক আনার কোনও উদ্যোগ নেওয়া হল না, সেটা সিএবি কর্তারা আত্মসমীক্ষা করুন। পাশাপাশি ঋদ্ধিমানও বুঝুন, এতদিন কাদের টিকিট দিয়ে এসেছেন। ঋদ্ধিমান বুঝুন, ফেসবুকের ওই বন্ধুরা আসলে কোনও বন্ধুই নয়। যারা বিদায়ী ম্যাচে একটিবারের জন্য মাঠে আসতে পারে না, এমন বন্ধুর ভিড় বাড়ানো কি সত্যিই খুব দরকার!