নির্মল দত্ত
কদিন ধরেই বাগযুদ্ধ চলছে। থামার তেমন লক্ষণ নেই। তাপস রায় ক্রমাগত আক্রমণ করে চলেছেন সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে। সুদীপ অবশ্য বেশি গুরুত্ব দিছেন না। বলেছেন, হাতি চলে বাজার...। ব্যাস, বাকিটা তাপসই বলে চলেছেন।
হঠাৎ এই বাগযুদ্ধের কারণ কী? শোনা যায়, পুজোর সময় এক বিজেপি নেতার বাড়িতে গিয়েছিলেন সুদীপ। এতেই নাকি গোঁসা তাপসের। তাঁর কথায়, দলের সাংসদ বিজেপি নেতার ঘরে কেন গেলেন? তিনি বিজেপিতে যাওয়ার দরজা খোলা রাখছেন। এতে দলের বদনাম হচ্ছে। সৌজন্যের নাম করে বিরোধী শিবিরের কারও বাড়ি যাওয়া উচিত নয়।
গত কয়েকদিন ধরে নানা কারণে তিনি কিছুটা ক্ষুব্ধ। তাপস রায়ের সেই ক্ষোভ নানা সময়ে বেরিয়ে আসছে। গত বছর দল তাঁকে আর মন্ত্রী করেনি। এবার মন্ত্রীসভা রদবদলে অনেকেই ভেবেছিলেন, তাপসের নাম থাকবে। কিন্তু এসে গেল অন্য একগুচ্ছ নাম। দলের সাংগঠনিক জেলা সভাপতির পদ থেকেও সরানো হয়েছে তাপসকে।
গোপন বৈঠকের কথাই যদি ওঠে, তাহলে আগে আঙুল ওঠার কথা দলের সর্বোচ্চ নেতৃত্বের দিকে। তিনি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে যতবার বৈঠক করেন, একান্তেই করেন। কোনও অফিসার সঙ্গে থাকেন না। কী আলোচনা হয়, এই দুজনই জানেন। নিশ্চিত থাকতে পারেন, এমন আলোচনা হয়, যার অধিকাংশটাই প্রকাশ্যে এলে কোনও পক্ষের কাছেই তা স্বস্তির হবে না। সবথেকে বড় বোঝাপড়া তো হয় সেই বৈঠকে।
অবাক লাগছে অন্য একটা বিষয়ে। এতদিন ধরে লোকসভার দলনেতাকে আক্রমণ করে চলেছেন। তারপরেও দলের তরফ থেকে রাশ টেনে ধরা হচ্ছে না। তাঁকে সেন্সর করা হচ্ছে না। সতর্ক করা হচ্ছে না। এই ব্যাপারগুলো থেকেই সন্দেহ তৈরি হয়। তবে কি দলের একটা অংশের ইন্ধন আছে? নইলে দিনের পর দিন এভাবে বলে যেতে পারতেন না।
অঙ্কটা পরিষ্কার। ২৪ এর নির্বাচনে সুদীপকে আর উত্তর কলকাতায় চাইছেন না দলের দ্বিতীয় সর্বশক্তিমান। কিন্তু লোকসভার দলনেতাকে তো দুম করে বসিয়ে দেওয়া যায় না। তাই এমন পরিস্থিতি তৈরি করো, যেন আর নিজেই দাঁড়াতে রাজি না হন। তাপসও কি তেমনটাই চাইছেন?
প্রশ্নগুলো সহজ। আর উত্তরও তো জানা।