ধীমান সাহা
নামগুলো এখন বহুচর্চিত। নতুন নতুন বান্ধবীর হদিশ পাওয়া যাচ্ছে। আর তাই নিয়েই মেতে আছে বাঙালি। ঘুরে ফিরে চর্চা সেই বান্ধবীদের নিয়েই।
যদি শুধুমাত্র পার্থ চ্যাটার্জির দুর্নীতির প্রমাণ পাওয়া যেত বা তাঁর বাড়ি থেকে এই টাকা উদ্ধার হত, আমি নিশ্চিত, এর ছিটেফোটা আলোচনাও হত না। কিন্তু মহিলা সঙ্গ পাওয়া গেছে। ব্যস, বাঙালিকে আর দেখতে হচ্ছে না। একেবারে হামলে পড়েছে।
গত এগারো বছর ধরে চোখের সামনে একের পর এক নির্লজ্জ স্তরের দুর্নীতি হয়ে গেছে। আম বাঙালির কোনও হেলদোল ছিল না। তাঁরা দিব্যি গা বাঁচিয়ে চলেছেন। এইসব নেতামন্ত্রীর কাছেই ছুটেছেন ব্যক্তিগত অনুগ্রহের জন্য। এঁদের পাশে দাঁড়িয়েই দাঁত কেলিয়ে সেলফি তুলেছেন।
আসলে, সোশ্যাল মিডিয়ায় বাঘ মারা বাঙালি দুর্নীতি নিয়ে কোনওকালেই তেমন সিরিয়াস নয়। নিজে সীমিত ক্ষমতা পেলেই তার সীমাহীন অপব্যবহার করবেন। আর অন্যের বেলা একেবারে চালুনি হয়ে খুঁত ধরবেন। পার্থবাবুর এইসব কীর্তিকলাপ হয়ত সেভাবে সামনে আসেনি। কিন্তু চোখের সামনে যেগুলো দেখা গেছে, সেগুলোও তো কম নয়। এসএসসি নামক ব্যবস্থাটা আপনার চোখের সামনে প্রায় উঠে গেল। আপনি দেখতে পাননি? আপনার পাড়ায় আগে প্রতি বছর বেশ কয়েকজন যোগ্য ছেলের চাকরি হত। এখন আর সেটা হয় না। আপনি বুঝতে পারেননি? তাহলে এখন হইচই করছেন কেন?
আসলে, মদন মিত্রর ক্ষেত্রে আপনি যেমন, শোভন চ্যাটার্জির ক্ষেত্রে আপনি যেমন, পার্থ চ্যাটার্জির ক্ষেত্রেও আপনি তেমনই। আপনি সেইসব ভিডিও তারিয়ে তারিয়ে উপভোগ করেন। আর বলে যান, ছি ছি, কী লজ্জার ব্যাপার। দেখেছো কাণ্ড! মশাই, আপনাকে কে দেখতে বলেছে?
মনে করে দেখুন তো, গত পাঁচ বছরে আপনি কটা বই পড়েছেন? কদিন খবরের কাগজের এডিটোরিয়াল পড়েছেন? অথচ, এইসব ভিডিও দিব্যি দেখেছেন। চুটিয়ে উপভোগ করেছেন। আর নিজেকে আপডেটেড ভেবে নিজের পিঠ চাপড়ে দিয়েছেন।
হ্যাঁ, আপনার মতো বাঙালি যতদিন থাকবে, এই শোভন চ্যাটার্জি, পার্থ চ্যাটার্জিরাও থাকবেন। আপনি বান্ধবী নিয়েই চর্চা করুন। আপনাকে আর দুর্নীতি নিয়ে সোচ্চার হতে হবে না।