বেঙ্গল টাইমস প্রতিবেদন: কোন চেয়ারে বসে কোনটা বলা যায়, আর কোনটা বলা যায় না, এই নীতিশিক্ষার বড়ই অভাব। তাই যে যা খুশি মন্তব্য করেই চলেছেন। সেই তালিকায় নবতম সংযোজন বিধাননগর পুরসভার চেয়ারম্যান কৃষ্ণা চক্রবর্তীর।
পুরসভার ক্ষেত্রে চেয়ারম্যানের ভূমিকা একরকম। কিন্তু পুরনিগমের (কর্পোরেশন) ক্ষেত্রে চেয়ারম্যানের ভূমিকা একেবারেই অন্যরকম। সেখানে তাঁর কাজ মূলত সভা পরিচালনা করা। অনেকটা বিধানসভা বা লোকসভার স্পিকারের মতোই। অন্যান্য কাউন্সির বা মেয়র পারিষদ যা বলতে পারেন, একজন চেয়ারম্যান তা বলতে পারেন না। নিজের দপ্তরে, নিজের চেয়ারে বসে তো একেবারেই পারেন না। কিন্তু কী অবলীলায় বলে গেলেন!
মেয়র সব্যসাচী দত্তর বিরুদ্ধে অনাস্থার নোটিশ জমা পড়েছে। সাংবাদিকদের সামনে তিনি বলতেই পারতেন, একটি নোটিশ জমা পড়েছে। এত জন সই করেছেন। ১৫ দিনের মধ্যে অধিবেশন ডাকা হবে। সেখানে অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা ও ভোটাভুটি হবে।
কিন্তু তিনি থামতে শেখেননি। অনর্গল বলেই গেলেন। এটা যে দলের সিদ্ধান্ত, সেটা ব্যাখ্যা করার দায়িত্বও তিনিই নিয়ে ফেললেন। সবাই দলের সিদ্ধান্ত মেনে কাজ করবেন, এমন আশ্বাসও দিলেন। এতজন অনাস্থা জানিয়েছেন, অতএব মেয়রের সরে দাঁড়ানো উচিত, এমনটাও বলে ফেললেন। তিনি নিজে মেয়র হতে ইচ্ছুক, এমনটাও বলে ফেললেন। এবং ওই চেয়ারে বসেই।
ভাবতে অবাক লাগে, যাঁর এই ন্যূনতম কাণ্ডজ্ঞানটুকু নেই, যাঁর এই ন্যূনতম শিক্ষাটুকু নেই, তাঁকে কিনা বিধাননগর পুরনিগমের চেয়ারম্যান করা হয়েছিল! এবং তিনি নাকি মেয়র হওয়ারও স্বপ্ন দেখছেন! চেয়ারম্যানের সরকারি চেয়ারে বসে যে এমন আবোল–তাবোল বলা যায় না, তা নিয়ে গণমাধ্যমেও আলোচনা চোখে পড়ল না। আসলে, নিয়ম না মানতে মানতে এমন পর্যায়ে এসে গেছে যে, সেটা আর অনিয়ম বলে মনেও হয় না। মূর্খামি এমনই সর্বব্যাপী ছড়িয়ে গেছে যে, আলাদা করে আর চোখেও পড়ে না।
ওই চেয়ারে বসে যে ওই কথা বলা যায় না, একজন কাউন্সিলরও তাঁকে শেখাতে পারলেন না! একদিন নয়, পর পর দুদিন ওই চেয়ারে বসে লাগাতার আবোল তাবোল বকে গেলেন। তারপরও সতর্ক করা হল না! অবশ্য, যাঁর অনুপ্রেরণায় তিনি চলেন, তিনিও সরকারি মঞ্চ আর দলীয় মঞ্চের তফাত কোনওকালেই বোঝেননি।
সত্যিই, অনুপ্রেরণা বড় ভয়ঙ্কর জিনিস।
1 comment
চেয়ারম্যান নয় কৃষ্ণা চক্রবর্তী চেয়ারপার্সন,
এমন মিডিয়া থাকলে জ্ঞান এমনিতেই হারিয়ে যাবে।