চিঠি লেখার বাতিক আর গেল না।
প্রতিবার মরশুম শুরুর আগে এই চিঠিকে ঘিরে শুরু হয়ে যায় সস্তা নাটক। এবারও তাই হল।
ইস্টবেঙ্গল কর্তারা যথারীতি এবারও চিঠি লিখেছেন স্পন্সর ইমামিকে। কোন কোন ফুটবলারকে এবার ধরে রাখা উচিত, কাকে কোচ করে আনা উচিত, কোন কোন ফুটবলারকে ছেড়ে দেওয়া উচিত, সেই সংক্রান্ত চিঠি।
ক্লাব কোচের কাছ থেকে তালিকা নিতেই পারে। স্পন্সরকে সেই তালিকা জানাতেই পারে। এর মধ্যে আপত্তির কিছু নেই। কিন্তু ছেলেমানুষিটা অন্য জায়গায়। সেই তালিকা স্পন্সরদের কাছে যাওয়ার আগেই ফাঁস হয়ে গেল। শুধু ফাঁস হল বললে কম বলা হয়, বলা ভাল, ফাঁস করে দেওয়া হল। ক্লাবের ফেসবুক পেজে সেই তালিকা আপলোড করে দেওয়া হল।
হায় রে! কাদের হাতে রয়েছে ক্লাব পরিচালনার ভার! এই তালিকা যে বাইরে প্রকাশ করতে নেই, এই বোধটুকুও নেই! প্রথমত, এই তালিকা একান্তই গোপন একটা তালিকা। এটা লিক হবে কেন? যাঁরা এই তালিকা তৈরি করছেন, তাঁদের এটুকু বিশ্বাসযোগ্যতা থাকবে না? তাহলে, এমন গুরুদায়িত্বে তাঁদের রাখা হয়েছে কেন?
কর্তাদের অনিচ্ছায় ফাঁস হয়েছে, এমনও নয়। তাহলে ক্লাবের সরকারি ফেসবুক পেজে এল কীভাবে? সেটা তো বাইরের লোক হ্যান্ডল করে না। ক্লাবের বিশ্বস্ত কেউ হ্যান্ডল করবেন, সেটাই স্বাভাবিক। তার মানে, হয় সেই তালিকা ইচ্ছে করেই প্রকাশ করা হয়েছে। নইলে, এই তালিকা প্রকাশ করা যায় না, এই বোধটুকুও নেই।
স্পন্সরের সঙ্গে নানা বিষয়ে ক্লাবের আলোচনা হবে, চিঠিচাপাটি হবে, মাঝে মাঝে মতপার্থক্যও হবে। এটা স্বাভাবিক ঘটনা। কিন্তু সেইসব চিঠিচাপাটি বারবার মিডিয়ায় চলে আসে কেন? যাঁরা এমন গোপন চিঠি নিজেরা ফাঁস করেন, তাঁদের আদৌ এসব চিঠি লেখার অধিকার আছে? সবকিছুতেই এমন গ্যালারি শো করতে হবে?
হতে পারে, স্পন্সরদের কাছে তাঁরা কী চেয়েছেন, সেটা সমর্থকদের জানিয়ে দিলেন। যেন পরে তাঁদের দোষারোপ না করা হয়। কিন্তু এই চিঠি কি প্রকাশ্যে আনার জিনিস? একটা পাড়ার ক্লাবের কর্তারাও জানেন, কোনটা লোককে জানাতে হয়, কোনটা জানাতে নেই। ভাবতে অবাক লাগছে, শতবর্ষপ্রাচীন ইস্টবেঙ্গল কর্তাদের এই সাধারণ কাণ্ডজ্ঞানটুকু নেই। এঁরা আনবেন পেশাদারিত্ব! এঁদের হাত ধরে এগিয়ে চলবে ফুটবল!