সৌরভকেও তাহলে জার্সি কিনতে হয়!‌

নন্দ ঘোষের কড়চা

অনেকদিন আগে একবার বেহালায় সৌরভ গাঙ্গুলির বাড়িতে গিয়েছিলাম। নিচে বসার ঘরে দেখলাম, অনেকগুলো ট্রফি সাজানো। সৌরভ গাঙ্গুলির মতো মানুষ দেশ–‌বিদেশে নানা ট্রফি, নানা স্মারক পেতেই পারেন। এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই। কিন্তু আমি নন্দ ঘোষ। সবকিছুকেই একটু বাঁকা চোখে দেখি। ফিসফিস করে একজনকে বলে ফেলেছিলাম, এত ট্রফি পেয়েছে?‌ কয়েকটা নিশ্চয় ময়দান মার্কেট থেকে কেনা। শুনেছি, ঘর সাজাতে অনেকেই ময়দান মার্কেট থেকে এটা–‌সেটা লিখিয়ে ট্রফি কেনে।

তখন নিছক মজা করে বলেছিলাম। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে, সত্যি হলেও হতে পারে। রবিবারের অনেক কাগজেই ছবি বেরিয়েছিল, মেয়ে সানাকে নিয়ে বার্সিলোনার গ্যালারিতে সৌরভ। ছবিটা নিজেরই তোলা। জানতেন, আর কেউ ছাপুক না ছাপুক, বাংলা কাগজগুলো তো ছাপবেই। তাই জাতির উদ্দেশে ছবিটা ভাসিয়ে দিয়েছিলেন। সেখানেই খবর বেরিয়েছিল, ম্যাচ দেখে মেসিদের ড্রেসিংরুমে যাবেন। আমরা আশা করেছিলাম, সোমবারের কাগজে হয়ত মেসির সঙ্গে আমাদের দাদার ছবি দেখব।

ও হরি। কোথায় মেসি!‌ বার্সিলোনার কোনও এক দু–‌চার আনার কর্তা। তিনি নাকি সৌরভকে বার্সিলোনার জার্সি তুলে দিচ্ছেন। সেই জার্সিতে লেখা দাদা। আর নম্বর লেখা রয়েছে ৯৯।

sourav

এখানেই যত খটকা। বার্সিলোনা কি সৌরভের জন্য দাদা লেখা জার্সি বানিয়েছিল?‌ সৌরভকে ‘‌‌দাদা’ বলে, তারা জানলা কীভাবে?‌ আর সৌরভ যে আইপিএলে ৯৯ নম্বর জাসি পরতেন, সেটাই বা তারা জানল কীভাবে?‌ সৌরভকে যদি এতই পাত্তা দেবেন, তাহলে তো তাঁরা মেসিকে দিয়েই জার্সিটা দেওয়াতে পারতেন। সৌরভও নিশ্চয় ওই কর্তারা সঙ্গে ছবি তুলবেন বলে সেজেগুজে যাননি।

নিশ্চয় বোঝানোর চেষ্টা করেছেন, তিনি ভারতীয় ক্রিকেট দলের প্রাক্তন অধিনায়ক। আরও এটা সেটা অনেক কিছুই বুঝিয়েছেন। বিশেষ ফল হয়নি। না হওয়ারই কথা। একে ক্রিকেট, তারপর আবার ভারত, তারপর আবার প্রাক্তন। সবমিলিয়ে মেসিদের কাছে বিশেষ পাত্তা পাওয়ার কথাও নয়। তাই কোনও এক মাঝারি কর্তা হয়ত ছবি তুলেছেন।

ওই যে ময়দান মার্কেটের ট্রফি কেনার কথা বলছিলাম। সেটাও হতে পারে। জার্সিটা হয়ত সৌরভই কিনে দাদা লিখিয়েছিলেন। বার্সিলোনার সুভেনিয়র শপে নিশ্চয় জার্সিতে নিজের নাম লেখানোর ব্যবস্থা থাকবে। নিশ্চয় সেখানে পছন্দের নম্বর লেখার ব্যবস্থা থাকবে। ব্যোমকেশ বা ফেলুদা হওয়ার দরকার নেই। এটুকু বোঝা যায় যে, ওই জার্সিটা সৌরভই ব্যবস্থা করেছেন। বার্সিলোনা যদি সম্মান দিত, তাহলে বার্সিলোনার ওয়েবসাইটেই ছবিটা আপলোড করত। এভাবে সৌরভকে ছড়াতে হত না।

মেসি না হয় দেখা করল না। তাই বলে নিজেকে জার্সি কিনে, নাম লিখিয়ে এভাবে ছবি তুলতে হবে?‌ এটা কি সৌরভকে মানায়?‌

এবার নিশ্চিত হলাম, বেহালার বাড়ির সব ট্রফিগুলো আসল নয়। দু–‌একটা নিশ্চয় ময়দান মার্কেট থেকে কেনা।
(‌নন্দ ঘোষের কড়চা। বেঙ্গল টাইমসের জনপ্রিয় বিভাগ। নন্দ ঘোষ একজন বিশ্বনিন্দুক চরিত্র। তিনি সবকিছুতেই দেখেন বাঁকা চোখে। বিভিন্ন বাংলা কাগজে বার্সিলোনার জার্সি হাতে সৌরভের ছবি দেখে তিনি এই লেখাটা লিখেছেন। সত্যি হতেও পারে, নাও হতে পারে। প্রিয় পাঠক নিছক মজা হিসেবেই দেখুন। )‌

Share

1 comment

নন্দ ঘোষ says:

খানকির ছেলে যদি দাদা নিজেই কেনে তাহলে লা লিগার অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে পোস্ট করেছে কেন?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.