কৃষ্ণদুলাল চট্টোপাধ্যায়
আমাকে বুঝাই দে স্বাধীনতা কী?
বছর বছর আমি দিন গুনেছি
লিজের গতর ছ্যাঁচে কালি করেছি
তবুও প্যাটের খ্যুলা জুবাতে লারেছি
আমাকে বুঝাই দে স্বাধীনতা কী?
ফতাকাটা কেন তুরা উড়াই চলিস?
বড়ো বড়ো বুলি গেলা কেনেই বলিস?
লাল লিল কানিটাকে পাড়ে আনে দে
জাড়ে ধুঁকা ছে’লাটাকে জামা করে দি
আমাকে বুঝাই দে স্বাধীনতা কী?
তুদের বুলির চোটে দিয়ে যাই ভোট
মদ মারে ভাঙে ফেলি লিজেদের জোট
ঢঁকরা হাঁপর হঁয়ে দিন কাটাছি
আমাকে বুঝাই দে স্বাধীনতা কী?
আমার ক্যুড়ার চালে নাই কেনে খড়?
আমার দিয়্যাল ফ্যাটে হঁয়েছে হাঁড়র
ব’লে দে কুথায় আমি মুড় গুঁজে রাখি
আমাকে বুঝাই দে স্বাধীনতা কী?
আমার ছেলার প্যাটে নাই কেন ‘ক’?
উদমা এঁড়ার পারা ঘুরে ডঁ ডঁ।
এমন স্বাধীন তবে কেনে হঁয়েছি?
আমাকে বুঝাই দে স্বাধীনতা কী?
আমার বৌয়ের গায়ে কেনে নাই কানি?
টুগদু টেনার লাগে কেনে টানাটানি।
তবে কি ভূতের বেগার খাঁটে ম’রেছি
আমাকে বুঝাই দে স্বাধীনতা কী?
ন্যাংটা ছেলার পাল আঁত খলা হঁয়ে
ডহর ডাঙার মাঝে কাঁদে শুঁয়ে শুঁয়ে
ডাট পুরু ছিলাগুলা অকালে খ্যাঁয়েছি
আমাকে বুঝাই দে স্বাধীনতা কী?
(আঞ্চলিক ভাষায় রাঢ় বঙ্গে প্রায় প্রবাদ হয়ে ওঠা একটি কবিতা। আমাকে বুঝাই দে স্বাধীনতা কী। চার দশক আগে লিখেছিলেন লোককবি কৃষ্ণদুলাল চট্টোপাধ্যায়। স্বাধীনতা দিবসের দিন সেই কবিতা তুলে ধরা হল বেঙ্গল টাইমসের পাঠকদের জন্য)