তোর্সা চ্যাটার্জি
অনেকে গরমের সময় ঠাণ্ডার দেশে যান। কিন্তু যদি শীতের সময় যাওয়া যায়! সেই জায়গার সৌন্দর্য যেন একলাফে অনেকখানি বেড়ে যায়।
ঠিক তেমনি, বর্ষাকালে কোথায় যাবেন ? যদিও শ্রাবণ ফুরিয়ে গেছে। ক্যালেন্ডারে এখন ভাদ্র। সরকারিভাবে শরৎ এসে গেছে। কিন্তু এখনও ঝিরিঝিরি বৃষ্টি নেমেই চলেছে। বর্ষা কাগজে কলমে গেলেও তার হ্যাং ওভার দিব্যি রয়ে গেছে।
ভাবছেন এই সময় কোথায় ঘুরে আসা যায়। পাহাড়ের কথা বাদ দিন। যখন তখন ধস নেমে রাস্তা বন্ধ। জঙ্গলে তো ঢুকতেও পাবেন না। তার থেকে জলের দেশে ঘুরে এলে কেমন হয় ? বেশি দূর নয়, কাছেই- মুকুট মণিপুর।
এই বর্ষায় মাঝে মাঝেই শোনেন, মুকুট মণিপুর থেকে এত কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে। তখনই বারবার শিরোনামে আসে বাঁকুড়া জেলার এই ছোট্ট পর্যটনকেন্দ্রটি। জলাধার এখন কানায় কানায় ভর্তি। এটাই তো মুকুট মণিপুরে আসার আদর্শ সময়।
কীভাবে যাবেন ? খুব সহজ। যারা ট্রেনে যাবেন, তাঁরা রূপসী বাংলা বা আরণ্যক ধরে বাঁকুড়ায় নামতে পারেন। সেখান থেকে বাসে ঘন্টা দুই। গাড়ি ভাড়া করে নিলে আরও তাড়াতাড়ি পৌঁছে যাবেন। থাকার জন্য সরকারি ব্যবস্থা যেমন আছে, তেমনি বেসরকারি ব্যবস্থাও আছে। সরকারির মধ্যে ইরিগেশন বাংলো, যুব আবাস, সোনাঝুরি। বেসরকারির মধ্যে আছে অপরাজিতা, আম্রাপালি। পিয়ারলেসও আছে। তবে ভাড়া বড্ড বেশি।
কোথাও যাওয়ার দরকার নেই। শুধু বিকেল বেলা বাঁধানো পাড় ধরে হেঁটে আসুন। এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম মাটির বাঁধ। একপাশে জল তো অন্যপাশে জঙ্গল। সবমিলিয়ে দারুণ এক দৃশ্যকল্প। ভুটভুটি ভ্যান নিয়ে চলে যান মুসাফিরানায়। নতুন একটি পার্ক। বেশ সাজানো-গোছানো। সৌন্দর্যায়নের নতুন ঠিকানা। আরেকটু গেলে পরেশনাথ মন্দির। সবমিলিয়ে এক ঘন্টার মধ্যে দারুণ সফর।
যদি বৃষ্টি পড়ে ? একটু না হয় ভিজলেন। আশেপাশে দোকানও আছে। চাইলে সেখানে আশ্রয় নিতে পারেন। বোটিং করতে পারেন। তবে ভরা জলাশয়ে এড়িয়ে চলাই ভাল। দুটো দিন সুন্দরভাবে কেটে যাবে।
মহালয়ার পর থেকে ভিন শুরু হয়ে যাবে। হোটেলগুলি এর মধ্যেই অনেক বুকিং হয়ে গেছে। তখন যাঁরা আসবেন, তাঁরা ছলাৎছল জলের আওয়াজ পাবেন না। ভরে ওঠা মুকুট মণিপুরের সৌন্দর্যই আলাদা। যারা পুজোর পর বা শীতকালে আসবেন, তারা নিশ্চিতভাবেই বঞ্চিত হবেন। তাই ফাঁকায় ফাঁকায় এই সময় ঘুরে নিন।