সেদিন বুদ্ধবাবু কিন্তু তেড়ে আসেননি

রক্তিম মিত্র
গোপালকৃষ্ণ গান্ধীর কথা খুব মনে পড়ছে। এখন কোথায় আছেন, কে জানে!‌ যেখানেই থাকুন, নিশ্চয় টিভিতে চোখ রেখেছিলেন। ইন্টারনেটে বা কাগজে নিশ্চয় এই বাংলার খোঁজখবর রাখেন।
গান্ধীজির এই নাতি এই বাংলায় এসেছিলেন রাজ্যপাল হয়ে। একটা ব্যতিক্রমী ছাপ রেখে গিয়েছেন। অন্তত তাঁর পূর্বসূরী বীরেন জে শাহ–‌র থেকে সবদিক থেকেই অনেক উন্নত মনে হয়েছিল এই প্রাক্তন আই এ এস–‌কে। একজন যথার্থ শিক্ষিত, মার্জির রুচির মানুষ। এই রাজ্যের বিভিন্ন দল থেকে সাধারণ মানুষ দারুণভাবেই স্বাগত জানিয়েছিলেন এই মানুষটিকে।

gopalkrishna gandhi
এসেছিলেন ২০০৪ এ। ফিরে গেলেন ২০০৯ এ। শুরুর দিকটা নির্ঝঞ্ঝাট। কিন্তু পরের দিকটা বাংলা রাজনীতির উত্তাল এক সময়। সিঙ্গুর, নন্দীগ্রাম তখন শিরোনামে। কখনও প্রতিবাদে রাজভবন অন্ধকার করে রাখলেন। কখনও ‘‌হাড়হীম সন্ত্রাস’‌ এর বিবৃতি দিলেন। কখনও বিরোধী নেত্রীর ধর্না মঞ্চেও ছুটে গেলেন।
রাজ্য সরকার অস্বস্তিতে পড়তে পারে, এমন অনেক কাজই করতে দেখা গিয়েছিল তাঁকে। দল হিসেবে সিপিএম দু–‌একবার মৃদু উষ্মা প্রকাশও করেছে। সেদিন গোপালবাবুর এই ভূমিকা বেশ ভালই লেগেছিল তৃণমূল নেত্রীর। তাঁর মনে হয়েছিল, রাজ্যপাল বাংলার বিবেক।
কেশরীনাথ ত্রিপাঠী মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধাচরণ করেননি। শুধু ফোন করে পরামর্শ দিয়েছেন। পরিস্থিতি জানতে চেয়েছেন। তাতেই তিনি এত ক্ষুব্ধ!‌ এত অপমাণিত!‌ হঠাৎ মনে হল, রাজ্যপাল ষড়যন্ত্র করছেন!‌ আজ কেশরীনাথ যা করেছেন, সেদিন গোপালকৃষ্ণ গান্ধী তার থেকে অনেকগুন বেশি করেছিলেন। প্রকাশ্যেই বারবার অপদস্থ করেছিলেন।
কিন্তু তখন পাল্টা একটি কথাও বলেননি বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। আর আজ!‌ যুদ্ধকালীন তৎপরতায় প্রেস কনফারেন্স করতে হল। তফাতটা বেশ বোঝা যায়।

Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.