আবার ব্যালটের দাবি!‌ ইতিহাসকে পিছিয়ে দিতে চান?‌

সব্যসাচী কুন্ডু

ভোটে হেরে গেলেই অনেক অভিযোগ শোনা যায়। সে অভিযোগের সারবত্তা আছে না নেই, সেটা ভেবেও দেখে না রাজনৈতিক দলগুলি। আর এই রোগে প্রায় সব দলই কম–‌বেশি আক্রান্ত। ভোটে হারলেই উল্টোপাল্টা অভিযোগ করা যেন অভ্যেস হয়ে দাঁড়িয়েছে। হারকে স্বাভাবিকভাবে মেনে নেওয়ার মানসিকতাই যেন হারিয়ে ফেলেছে রাজনৈতিক দলগুলো। ‌

evm2

উত্তরপ্রদেশ নির্বাচনে ভরাডুবির পর মায়াবতী দাবি তুলে বসলেন, ‘‌ইভিএম মেশিনে গন্ডগোল আছে। যেখানেই বোতাম টিপুক, বিজেপিতে ভোট পড়ে যাচ্ছে।’‌ এখন দেখা যাচ্ছে একে একে অনেকেই গলা মেলাচ্ছেন। যে কোনও বিষয়ে হইচই করার সুযোগ পেলে অরবিন্দ কেজরিওয়াল এগিয়েই থাকেন। এক্ষেত্রেই বা পিছিয়ে থাকবেন কেন?‌ তিনিও আসরে নেমে পড়লেন। বাকিরাও নেমে পড়লেন। দাবি উঠল, আবার ব্যালট ফিরে আসুক, ইভিএমে ভোট নেওয়া চলবে না। এই দাবি নিয়ে তাঁরা নির্বাচন কমিশনের দপ্তরেও চলে গেলেন।

এঁদের দেখে সত্যিই করুনা হয়। এরা কি ইতিহাসের গতিকে থামিয়ে দিতে চাইছেন?‌ ইভিএমে কোথাও কোথাও ত্রুটি হতেই পারে। তাই বলে ব্যবস্থাটাকেই বাতিল করার দাবি?‌ কোনদিন এরা বিমান বাতিল করে গরুর গাড়ি চালু করার দাবি করে বসবেন। এই দাবিতে কিনা সুর মিলিয়ে ফেলল কংগ্রেসও!‌ কংগ্রেসও কি বিশ্বাস করে ইভিএমে গোলমাল বলে তারা উত্তরপ্রদেশে হেরেছে?‌ হারের পর হারটাকে সহজভাবে মেনে নেওয়ার শিক্ষাটাই এরা পায়নি। নির্বাচনে হারজিত হতেই পারে। তাই বলে ইভিএমের দিকে আঙুল তুলতে হবে?‌ একযোগে নির্বাচন কমিশনে নালিশ জানাতে হবে?‌ আবার ব্যালট ফিরিয়ে আনার দাবি তুলতে হবে?‌ রাজনীতিকে এঁরা কতটা সস্তা করে তুলছেন, তা এঁরা নিজেরাও বোঝেন না। সরকারকে দায়িত্বশীল হতে হয়। কিন্তু বিরোধীদের দায়িত্বও কম নয়। দোহাই, বিরোধীতার নামে ইতিহাসকে আবার পেছনের দিকে ঠেলে নিয়ে যাবেন না।

Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.