পাল্টা যুক্তি থাক, আত্ম সমীক্ষা ও জরুরি

পাল্টা যুক্তি থাক, আত্ম সমীক্ষা ও জরু
সরল বিশ্বাস

ওই কন্ঠস্বরটা কি সত্যিই কলতনের ছিল ? প্রশ্নটা সহজ, কিন্তু উত্তরটা বড়ই অস্পষ্ট| উত্তর হতে পারতো হ্যাঁ অথবা না| কিন্তু তার জায়গায় ঘুরে বেড়ালো অন্য কয়েকটা বেয়াক্কেলে প্রশ্ন| প্রশ্ন নম্বর এক ওই অডিও কুনাল ঘোষের হাতে কিভাবে গেল @? প্রশ্ন দুই, পুলিশ অডিও ফাইল টা কুনাল ঘোষকে দিল নাকি কুনাল তুলে দিলেন পুলিশের হাতে ? পুলিশ যদি পায় তাহলে তা কুনালের কাছে যায় কিভাবে ? পুলিশ কি কণ্ঠস্বরের নমুনা পরীক্ষা করেছিল ? ওটা যে কলতানেরই কন্ঠস্বর, তা পুলিশ কিভাবে নিশ্চিত হল ?

এসব প্রশ্নগুলোই ঘুরে বেড়ালো সোশ্যাল মিডিয়ায় | কিন্তু আসল প্রশ্নটার উত্তর অধরাই থেকে গেল| কলতান দাশগুপ্ত একজন অত্যন্ত শিক্ষিত রুচিবান ও সংস্কৃতিমনস্ক রাজনৈতিক কর্মী| তিনি ফোনে কাউকে এমন কথা বলতে পারেন, এটা বিশ্বাস করা সত্যিই কঠিন| কিন্তু পাশাপাশি উল্টো দিকটাও ভাবার আছে | একশো শতাংশ নিশ্চিত না হয়ে কুনাল ঘোষ কি ওই অডিও টাইপ নিয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করতেন? এই প্রতিকূল সময়ে নিশ্চিত না হয়ে পুলিশি কি গ্রেফতার করত? যদি কোন কারণে প্রমাণ হয়ে যায় এই অডিও ভুয়ো বা কণ্ঠস্বরটা কলতান এর নয়, তাহলে সরকার কি আরো ব্যাকফুটে চলে যাবে না ? কলতান গ্রেপ্তার হলে বামপন্থী আইনজীবীরা হাইকোর্টে যাবেন এ তো জানা কথাই| সেখানে পুলিশ যদি সঠিক প্রমাণ না দিতে পারে , তাহলে তো রাজ্যেরই মুখ পড়বে | এমনিতেই আরজিকর কাণ্ডে এবং জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনের কারণে সরকার বেশ কোণঠাসা| এই অবস্থায় আদালতে গিয়ে এমন থাপ্পড় খেতে কি সরকার চাইবে ?

এই প্রশ্নটাই বড় বেশি করে ভাবাচ্ছে| আবার বলছি, কলতান দাশগুপ্ত জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনে হামলা করতে চাইবেন, এমনটা বিশ্বাস করতে মন চায় না| কিন্তু এটাও ঠিক , ওই কণ্ঠস্বর কলতনের নয় , এমনটাও জোর দিয়ে বলা যাচ্ছে না| বাম কর্মী ও আইনজীবেরাও জোর গলায় বলতে পারছেন না | তাই এই প্রশ্ন ওই প্রশ্ন সামনে এনে আসল প্রশ্নটা এড়াতে চাইছেন| পুলিশ ফোনে আড়ি পাতছিল কিনা এটা অবশ্যই বড় প্রশ্ন | একইসঙ্গে এটা অবশ্যই উদ্বেগের | কিন্তু এটা এখনকার দিনে একটা ওপেন সিক্রেট | সরকার আড়িপাতে , পুলিশ আড়ি পাতে , এটা আমরা সবাই ধরেই নিয়েছি | পুলিশের তরফ থেকে ফাঁদ পাতা হতে পারে , এমন আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়ার নয়| কিন্তু গলাটা যদি সত্যিই কলতনের হয়ে থাকে, তবে সেটাও ভাবার বিষয়|

অনেক উদ্বেগের ভিড়ে এই সংশয় টাও যেন হারিয়ে না যায়| বাইরে যে যুক্তিই সাজানো হোক না কেন, ভেতরে ভেতরে একটা আত্ম সমীক্ষাও কিন্তু জরুরি|

 

 

Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.