সজল পাত্র
বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য সম্পর্কে একটা কথা প্রায়ই বলা হয়, মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করার সময় তিনি নাকি বলেছিলেন, আমি চোরেদের মন্ত্রিসভায় থাকব না।
তিনি কবে এমনটা বলেছিলেন, কাকে বলেছিলেন, কে জানে! কিন্তু এমন প্রচারের বিরাম নেই। সেই সময় সবেধন নীলমণি দূরদর্শন ছাড়া আর কিছুই ছিল না। কোথাও কোনও রেকর্ডিং নেই।
রেকর্ডিং নেই মানেই যে বলেননি, এমনটা মোটেই নয়। কোনও সাংবাদিক সম্মেলনে বলেছিলেন? একান্তে কোনও রিপোর্টারকে বলেছিলেন? আনন্দবাজারে বেরিয়েছিল? যে কাগজে তাঁর পদত্যাগের খবর এক্সক্লুসিভ হয়েছিল, সেই আজকাল কাগজে বেরিয়েছিল? সেই সময়ের অন্য কোনও কাগজে বেরিয়েছিল?
বেরিয়েছিল একমাত্র বর্তমানে। তাও আবার তাঁর মেয়েকে উদ্ধৃত করে। কিন্তু মিথ্যার কী মহিমা! টিভিতে যাঁরা বিতর্ক করতে আসেন, তাঁরা হামেশাই বুদ্ধবাবুর মুখে এমন উক্তি বসিয়ে দেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় তো যে পারেন, এমন কথা লিখে ফেলেন।
বাম নেতা কর্মীরাও তেমনি। বছরের পর বছর এমন একটা প্রচার চলে আসছে। এটাকে কাউন্টার করার সেই চেষ্টাটাই চোখে পড়ে না। তাঁদের আচরণ দেখলে মনে হবে, বুদ্ধবাবু সত্যিই এমনটা বলেছিলেন। আসলে, অতীত না জানলে এই বিড়ম্বনাগুলো থেকেই যায়। অনেককিছুই হজম করে নিতে হয়। আর এই মৌনতাকে বাকিরা সত্যি বলেই ধরে নেন।
কী আশ্চর্য, মৃত্যুর পরেও এই কাল্পনিক সংলাপের কোনও বিরাম নেই।