রাজ্যসভায় কানাইয়া কুমারকে চাই, দাবি ভিক্টরের

বেঙ্গল টাইমস প্রতিবেদন: 

‌কানাইয়াকুমারকে এই রাজ্য থেকে রাজ্যসভায় পাঠানো হোক। এমনই দাবি তুললেন বাম বিধায়ক আলি ইমরান (‌ভিক্টর)‌। এবার বাংলা থেকে রাজ্যসভায় পাঁচটি আসন খালি হচ্ছে। চারটি আসনে যাবেন তৃণমূলের প্রার্থীরা। পঞ্চম আসনে কে যাবেন, তা নিয়ে জল্পনা চলছে। বামেদের যা শক্তি, তাতে একক ক্ষমতায় তাঁদের কারও নির্বাচিত হওয়ার সম্ভাবনা নেই। আবার কংগ্রেসেরও সেই শক্তি নেই। বাম–‌কং মিলিতভাবে প্রার্থী দিলে তাঁর যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
সীতারাম ইয়েচুরি বামেদের প্রার্থী হতে পারেন, এমন সম্ভাবনা রয়েছে। রাজ্য নেতৃত্বের পক্ষ থেকে সীতারাম ইয়েচুরিকেই প্রার্থী হিসেবে চাওয়া হয়েছে। কংগ্রেসের দিক থেকেও ইয়েচুরির নামে আপত্তি থাকবে না, এমনটাই মনে করা হচ্ছে। কিন্তু পলিটব্যুরো আদৌ ইয়েচুরির নামে সায় দেবে কিনা, তা নিয়ে একটা সংশয় রয়ে গেছে।

kanhaiya3

ফরওয়ার্ড ব্লক বিধায়ক আলি ইমরান মনে করছেন, এ নিয়ে অহেতুক ঝুলিয়ে রাখার কোনও মানে হয় না। অহেতুক গড়িমসি করলে আগের দুবারের মতোই পরিস্থিতি জটিল হয়ে যাবে। যদি ইয়েচুরির নামে সম্মতি থাকে, সেটা দ্রুত জানানো হোক। আর যদি আপত্তি থাকে, তবে সেটাও দ্রুত জানানো হোক। তাহলে, বিকল্প নাম নিয়ে ভাবনাচিন্তার সুযোগ থাকবে। আগের দুবার কংগ্রেসের প্রদীপ ভট্টাচার্য ও অভিষেক মনু সিংভি রাজ্যসভায় গেছেন। দুটি ক্ষেত্রেই বামেদের গড়িমসির কারণেই পরিস্থিতি জটিল হয়েছে। শেষমেশ মমতার সম্মতি নিয়ে কং প্রার্থীর নাম ঘোষণা হয়েছে। এবার যেন তেমনটা না হয়, এখন থেকেই সতর্ক থাকা উচিত।

প্রার্থী হিসেবে কে পছন্দ?‌ ভিক্টরের কথায়, ইয়েচুরির যোগ্যতা নিয়ে সংশয় নেই। তাঁর গ্রহণযোগ্যতাও আছে। তিনি রাজি হলে কংগ্রেস তাঁকে সমর্থন করতে এককথায় রাজি হয়ে যাবে। কিন্তু তাঁদের দলেই নানা সমস্যা তৈরি হয়েছে। কংগ্রেসের সমর্থনে দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক রাজ্যসভায় যাবেন কিনা, তা নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়েছে। সেক্ষেত্রে বিকল্প নাম ভেবে রাখাটাও জরুরি।

victor5
সেই বিকল্প নাম কে? ভিক্টর জানালেন, এই মুহূর্তে কানাইয়া কুমার দারুণ প্রার্থী হতে পারে। ওই একজনই অনেকজনের সমান। কুড়িজন সদস্য মিলে যতটা সাড়া ফেলতে পারে, ও একা সেই সাড়া ফেলতে পারে। গত কয়েকবছরে কানাইয়া যেভাবে নিজেকে মেলে ধরেছে, যেভাবে গোটা দেশজুড়ে মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য হয়ে উঠছে, তাকে তুলে ধরার সময় এসে গেছে। লোকসভায় হারতে হয়েছে ঠিকই, কিন্তু সারা দেশে তার যা জনপ্রিয়তা, এই মুহূর্তে খুব কম লোকেরই তা আছে। একজন শিক্ষিত তরুণ, দারুণ বক্তা। মানুষের সমস্যা বোঝে। যে ভাষাটা মানুষ বোঝে, সেই ভাষায় কথা বলতে জানে। রাজ্যসভার উপযুক্ত প্রার্থী।
কিন্তু তিনি তো সিপিআই–‌এর। তাঁকে সিপিএম পাঠাতে রাজি হবে কেন?‌ ভিক্টরের দাবি, এই সময় সিপিএম–‌সিপিআই এসব দেখার সময় নয়। কানাইয়াকে সিপিআই–‌এর হিসেবে না দেখে, গোটা দেশের বাম সমাজের ও তরুণ সমাজের মুখ হিসেবে দেখা হোক। সিপিএম না সিপিআই, এসব সংকীর্ণতা দেখানোর এটা সময় নয়। বিজেপি–‌র বিরুদ্ধে প্রতিবাদের মুখ হিসেবে কানাইয়াকে তুলে ধরা হোক। ওকে বিজেপি যতটা ভয় পায়, আর কজনকে এতখানি ভয় পায়? রাজ্যসভায় পাঠানোর পর সারা দেশে ওকে ঘোরানো হোক। বিহারে বিভিন্ন জেলায় ঘুরে দেখেছি, ওর সভায় যেভাবে মানুষ ভিড় করছে, যেভাবে মানুষ ওর কথা শুনছে, সত্যিই ওর জন্য গর্ব হয়। একা একজন মানুষ এতখানি আলোড়ন তুলে দিয়েছে, ভাবতে ভরসা হয়। ওর পাশে দাঁড়ানোর এটাই সঠিক সময়। এই সময়টাকে যদি কাজে লাগানো না যায়, তাহলে পরে হয়ত আফশোস করতে হবে। ইতিহাস কিন্তু বারবার সুযোগ দেয় না।

Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.