সুমিত চক্রবর্তী
লঘু জিনিসের আড়ালে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা হারিয়ে যায়। যেমন হারিয়ে গেল চা–বাগান ও পর্যটন সংক্রান্ত ক্যাবিনেটের সিদ্ধান্তটি। নিঃসন্দেহে গুরুত্বপূর্ণ একটি সিদ্ধান্ত। কিন্তু না কাগজে, না চ্যানেলে, তেমন কোনও আলোচনা নেই। কারণ, অনেক লঘু বিষয়, অনেক চাপানোতর ঘোরাফেরা করছে।
সরকারের সিদ্ধান্ত, চা–বাগানের ১৫ শতাংশ পর্যন্ত জমিকে পর্যটনের কাজে ব্যবহার করা যাবে। চা–বাগান মালিকদের কাছ থেকে এমন প্রস্তাব আসছিল। পর্যটন সংস্থাগুলিও বারেবারে এমন প্রস্তাব দিচ্ছিল। এতে উত্তরের পর্যটন শিল্প অনেকটাই চাঙ্গা হতে পারে। এমনকী, চা–বাগানগুলির অর্থনীতিও কিছুটা হলেও উন্নত হতে পারে। বিকল্প কর্মসংস্থানও হতে পারে।
এতবড় একটা সিদ্ধান্ত। অথচ, বিধানসভায় আলোচনা ছাড়াই মন্ত্রীসভায় পাস হয়ে গেল। আলোচনাকে এড়িয়ে যাওয়ার প্রবণতাটা মাঝে মাঝেই দেখা যায়। আলোচনা হলে অন্যরাও এই সিদ্ধান্তের শরিক হতে পারতেন। সমালোচনার পাশাপাশি গঠনমূলক কিছু পরামর্শও উঠে আসত। যা হয়ত আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে আরও নতুন দিশা দেখাত।
পদ্ধতি যাই হোক, সিদ্ধান্তটা ভাল। অনেকের ইচ্ছে হয় চা–বাগানে থাকার। কিন্তু উপায় থাকে না। কোথাও কোথাও সেই সুযোগ থাকলেও খরচ অনেক বেশি। এবার বিভিন্ন বাগানে কটেজ বা হোম স্টে হলে খরচ হয়ত কিছুটা কম হবে। সেক্ষেত্রে নদী ও চা–বাগান লাগোয়া এলাকায় পর্যটকেরা থাকতে পারবেন। একজন এসে প্রচার করবেন, সোশাল সাইটে ছবি দেবেন। তাই দেখে অন্যরাও আগ্রহ দেখাবেন।
১) কটেজের সামনে কমলালেবুর বাগান বা জলাশয় করলে আকর্ষণ আরও বাড়তে পারে।
২) কেউ কেউ হয়ত গাছবাড়িও করতে পারেন।
৩) কংক্রিটের বড় হোটেল না হওয়াই বাঞ্ছনীয়।
৪) নিরাপত্তার বিষয়টি যেন গুরুত্ব পায়।
৫) কর্পোরেট আবহ না এনে, সেই চা বাগানের পরিবেশের সঙ্গে সামঞ্জস্য রাখা বেশি জরুরি।
৬) এই পর্যটন ব্যবসা যাতে মাফিয়াদের হাতে না চলে যায়, সেদিকে নজর রাখতে হবে।
৭) হোম স্টের মোড়কে যেন বিলাসবহুল বাগানবাড়ি না গজিয়ে ওঠে, সতর্ক থাকা জরুরি।
৮) শহর লাগোয়া বাগানকে ঘিরে রিয়েল এস্টেট হওয়ার আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যায় না।
আশার পাশাপাশি এইসব আশঙ্কাও আছে। তবু পদক্ষেপটি ভাল। আশা করি, সরকার আরও সদর্থক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে এগোবে। চা–বাগান ও পর্যটন হাত ধরাধরি করে হাঁটুক।
(চা–পর্যটনের বিষয়ে নানা দিক থেকে নানা মতামত উঠে আসুক। আশা–আশঙ্কার ছবিগুলো উঠে আসতেই পারে বেঙ্গল টাইমসে। আপনিও আপনার মতামত লিখে পাঠান ওপেন ফোরামে। লেখা পাঠানোর ঠিকানা: bengaltimes.in@gmail.com)
বেঙ্গল টাইমস। দীপাবলি সংখ্যা। ই ম্যাগাজিন। উপরের ছবিতে ক্লিক করলেই পড়তে পারবেন। দ্রুত পড়ে ফেলুন।