সুমিত চক্রবর্তী
এগজিট পোলকে কতটা ভরসা করা যায়? পুরোপুরি যায় না, তবে অনেকটাই যায়। মনে রাখবেন, এই সমীক্ষাগুলি করছে মূলত জাতীয় সংবাদমাধ্যম। যাদের অধিকাংশই বিজেপি ঘেঁসা। গত চার বছর ধরে নানা ইস্যুতে, কারণে–অকারণে তাঁরা বিজেপির পাশে দাঁড়িয়েছে। তারা এতদিন কংগ্রেসকে বা অন্যান্য শক্তিকে কার্যত পাত্তাই দেয়নি। সেইসব চ্যানেলগুলির সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে, সমানে সমানে টক্কর। তার মানে, ধরে নিতে হবে, হাওয়াটা কংগ্রেসের পক্ষে আরও কিছুটা অনুকূলে থাকবে।
রাজস্থান যে কংগ্রেসের দখলে আসছে, এ নিয়ে কোনও সংস্থারই তেমন সংশয় নেই। প্রায় সবাই কংগ্রেসকেই এগিয়ে রেখেছেন। মধ্যপ্রদেশ এবং তেলেঙ্গানায় লড়াই সমানে সমানে। যদি বিজেপি–ও জেতে, তাহলেও কিন্তু ঘাড়ের ওপর কংগ্রেসের নিশ্বাস। মধ্যপ্রদেশে কি সত্যিই বিজেপি জিতবে? খুব সহজে জিতবে বলে মনে হয় না। যদি জেতেও, তার পেছনে অনেকটা অবদান থাকবে মায়াবতীর। মায়াবতী নিজে বিশেষ সুবিধা করতে পারবেন না। তবে নিজের নাক কেটে হয়ত অন্যের যাত্রা ভঙ্গ করতে পারেন। ছত্তিশগড়েও লড়াই সমানে সমানে। তবে মনে হয়, কিছুটা হলেও এগিয়ে থাকবে কংগ্রেস।
মিজোরামকে তেমন হিসেবের মধ্যে ধরছি না। ছোট রাজ্য। সেখানে হয়ত আঞ্চলিক দলই এগিয়ে থাকবে। তেলেঙ্গানাতেও অনেকটাই এগিয়ে থাকবে টিআরএস। সেখানেও লড়াইয়ে কিন্তু থাকবে কংগ্রেসই। সরকার গড়তে টিআরএসের কি বিজেপি–কে প্রয়োজন হবে? তেমন সম্ভাবনা কম।
তাহলে, মোদ্দা কথাটা কী দাঁড়াল? রাজস্থান, ছত্তিশগড়ে বিজেপি হারছে। কংগ্রেস আসছে। মধ্যপ্রদেশে মায়াবতীকে ম্যানেজ করে কোনওরকমে বিজেপি হয়ত টিকে যেতেও পারে। কিন্তু ঘাড়ে কংগ্রেসের নিশ্বাস। তেলেঙ্গানায় টিআরএস, বিজেপি মূল লড়াই থেকে হাজার মাইল দূরে।
লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি যেখানে তিনশোর কাছাকাছি আসন পেয়েছিল, সেখানে কংগ্রেস পেয়েছিল মাত্র ৪৪। সেই কংগ্রেস এই পাঁচ রাজ্যের ভোটে নিঃসন্দেহে এগিয়ে থাকবে। মধ্যপ্রদেশে যদি বিজেপি শেষমুহূর্তে জিতেও যায়, ঘাড়ে কংগ্রেসের নিশ্বাস।
বলাই যায়, হাওয়া ঘুরছে। সেই হাওয়া ছড়িয়ে পড়বে অন্যান্য রাজ্যেও। একদিকে বিজেপির নেতৃত্বে কিছু ছোট দল। অন্যদিকে, কংগ্রেসকে সামনে রেখে আরও কিছু আঞ্চলিক দল। আগামী কয়েক মাস এমন ছবিটাই দেখা যাবে। ক্রমশ অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়বে ফেডারেল ফ্রন্ট।