অজয় কুমার
যখনই সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইফ–এই হোর্ডিং দেখি, সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর ছবি দেখি, খুব রাগ হয়। মনে হয়, চূড়ান্ত ভন্ডামি হচ্ছে। রাজ্য জুড়ে চলছে স্তাবকতার নির্লজ্জ প্রতিযোগিতা। সবাই তাঁবেদারি করতেই ব্যস্ত।
এবার পুজোয় নাকি বিভিন্ন মণ্ডপকে টাকা দেওয়া হয়েছে সেফ ড্রাইভের হোর্ডিং টাঙানোর জন্য। আদালতে খোদ সরকারই এমন ব্যাখ্যা তুলে ধরেছে। অর্থাৎ, প্রতিটি পুজো কমিটিকে টাকা দিয়ে নিজের ছবি টাঙাতে কার্যত বাধ্য করা। নিজের ছবিকে কেউ এত ভালবাসেন, এই মুখ্যমন্ত্রীকে না দেখলে বুঝতেই পারতাম না। তোতাপাখির মতো নেতা–মন্ত্রী–আমলারা বলে চলেছেন, এই প্রচারে নাকি দুর্ঘটনা কমে গেছে। এখন নাকি আর অ্যাক্সিডেন্ট হচ্ছে না। সবটাই নাকি মুখ্যমন্ত্রীর অনুপ্রেরণা।
এই সপ্তাহেই কাগজে বেরিয়েছে, সরকার আরও বেশি করে মদের লাইসেন্স দিচ্ছে। প্রায় গ্রামে গ্রামে মদ পৌঁছে দিতে চাইছে সরকার। দোকানি নয়, রাজস্ব বাড়ানোর জন্য এবার সরকারি এজেন্সি নাকি মদ বিক্রি করবে। যতগুলো দুর্ঘটনা ঘটছে, কীভাবে ঘটছে, একটু খোঁজ নিয়ে দেখেছেন? অধিকাংশ ক্ষেত্রেই মদ্যপান করা গাড়ি চালানোর কারণেই এই দুর্ঘটনা ঘটছে। অথচ, এই মদ্যপান নিয়ন্ত্রণ করার কোনও পদক্ষেপ চোখে পড়ছে না। উল্টে সরকার ঢালাও উৎসাহ দিচ্ছে মদ্যপানে। এক্ষেত্রে সত্যিই বিরাট এক ‘অনুপ্রেরণা’ কাজ করছে। আর এই ‘অনুপ্রেরণা’রই মাশুল দিতে হচ্ছে প্রাণ দিয়ে।
একদিকে ঢালাও মদ্যপানে উৎসাহ দেওয়া। আর অন্যদিকে হোর্ডিংয়ে ছবি টাঙিয়ে বলা হচ্ছে, সেফ ড্রাইভ। এ অনেকটা চোরকে চুরি করতে বলে গৃহস্থকে সাবধান হতে বলার মতোই। অনেক হয়েছে, এবার এই ভন্ডামি বন্ধ হওয়া দরকার। যদি মদের দোকান বাড়াতেই হয়, দোহাই সেফ ড্রাইভের হোর্ডিংগুলো খুলে ফেলা হোক।