সোহম সেন
মাত্র কয়েক মাস আগের কথা। ইস্টবেঙ্গলের টিডি হয়ে এলেন সুভাষ ভৌমিক। শুরু থেকেই কোচ খালিদ জামিলকে তাড়াতে যেন উঠে পড়ে লাগলেন লাল হলুদ কর্তারা। রোজ নিয়ম করে অপদস্থ করা হচ্ছিল খালিদকে। আর এই কাজে কর্তারা ব্যবহার করেছিলেন সুভাষ ভৌমিককে।
সুভাষ ভৌমিক তখন নিজের মর্জিতেই চলছিলেন। কবে প্র্যাকটিস, কী টিম, কোনও কিছুই খালিদের সঙ্গে আলোচনা করছিলেন না। জাস্ট উপেক্ষা করছিলেন। এমনকী ফুটবলাররাও যেন খালিদের সঙ্গে কথা না বলেন, তাঁরাও যেন খালিদকে পাত্তা না দেন, সেই ব্যবস্থাই করেছিলেন সুভাষ ভৌমিক। আসিয়ান জয়ী কোচের কাছ থেকে এমন আচরণ সত্যিই কাম্য ছিল না। খালিদ একজন প্রাক্তন ফুটবলার, আই লিগ জয়ী কোচ। সেই অপমান ও হেনস্থা তাঁর প্রাপ্য ছিল না। কিন্তু দিনের পর দিন তাঁকে হেনস্থা করে গেছেন সুভাষ।
সেটাই এখন ব্যুমেরাং হয়ে ফিরে আসছে। একদিন সুভাষকে ব্যবহার করে খালিদকে ছেঁটে ফেলতে চেয়েছিলেন কর্তারা। আজ নতুন আসা বিদেশি কোচকে সামনে রেখে সুভাষের সঙ্গে সেই একই রকম ব্যবহার করা হচ্ছে। সবকিছুই হচ্ছে নতুন কোচের নির্দেশে। কর্তাদের ভাবখানা এমন, সুভাষ এবার মানে মানে সরে পড়ুন। নইলে এমন অনেক হেনস্থা অপেক্ষা করে আছে।
হ্যাঁ, ইস্টবেঙ্গলে সুভাষ ভৌমিকের বিদায় ঘণ্টা প্রায় বেজেই গেছে। দল নতুন কোচের কথাতেই চলবে। ফুটবলাররাও নতুন কোচের কথা শুনেই চলবেন। যত দিন যাবে, সুভাষ ক্রমশ কোণঠাসা হবেন। একসময় সম্মান বাঁচাতে নিজেকেই হয়ত পদত্যাগ করতে হবে। এই আচরণ সত্যিই সুভাষ ভৌমিকের প্রাপ্য নয়। কিন্তু মাত্র কয়েক মাস আগে তিনি যেটা করেছিলেন, সেটাও তাঁর কাছে প্রত্যাশিত ছিল না।
বিচক্ষণ সুভাষ নিশ্চয় দেওয়ালের লিখন পড়তে পারছেন। কী জানি মনে মনে হয়ত ভাবছেন, খালিদের সঙ্গে ওই আচরণ করা উচিত হয়নি। বিশেষ করে সুভাষ ভৌমিক যিনি নানা কর্তাদের নানা অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়ে গেছেন, তিনি খালিদ–বিদায় চিত্রনাট্যে এভাবে ক্রীড়নক হয়ে উঠবেন, সত্যিই ভাবা যায়নি। হয়ত সেই কারণেই আজ সুভাষের পাশে দাঁড়ানোর লোক নেই।