#১ নিজের স্ত্রী অপেক্ষা কোন মহিলা কে সুন্দরী বলিবেন না। কুশ্রীও বলিবেন না। কারণ দুই ক্ষেত্রেই বিপদের সম্ভাবনা প্রবল। প্রথমটায় যুদ্ধ ঘোষণা হইবে। দ্বিতীয়টায় অন্য মহিলা নিরীক্ষণের দায়ে আপনি চরিত্রহীন বলিয়া ভূষিত হইবেন।
#২ বাজারে কোন মহিলাদের সাথে নিয়মিত বার্তালাপ করিবার অভ্যেস থাকিলে ঘুণাক্ষরেও তাহা স্ত্রীর সম্মুখে প্রকাশ করিবেন না। তাহা হইলে আপনার প্রত্যহ বাজার হইতে টাটকা জিনিস আনিবার মহৎ উদ্দেশ্যকে অন্য দৃষ্টিতে দেখা হইবে।
#৩ স্ত্রীর রান্না গ্রহণযোগ্য না হইলেও তাহা কখনই মুখে প্রকাশ করিবেন না। বরং আপনার মধ্যপ্রদেশ স্থুল হইবার পেছনে যে ওনার এ হেন সুস্বাদু রান্নাই কারণ তাহাই ফলাও করিয়া জানাইবেন। প্রত্যহ অফিসে আপনি যে বাড়ির খাবার ভিখারিকে দান করিয়া নিকটবর্তী ভজন লালের দোকানের আলুর পরোটা আর তৎসহকারে পরিবেশিত আলুর তরকারি তৃপ্তি সহকারে গ্রহণ করেন সে সত্য সযত্নে গোপন রাখিবেন।
#৪ শাশুড়ি মাতা বা শ্বশুর কূলের কেহ আসিলে সদা হাস্য বদনে থাকিবেন। এবং তাহাদের সম্মুখে স্ত্রীর যাবতীয় বাক্যবাণ সহ্য করিয়া ওনার পছন্দ মত সংশোধিত হইবার নিরলস প্রয়াস দেখাইবেন। জানিবেন দুঃসময় চিরকাল থাকে না।
#৫ সন্তানের জন্মকাল হইতে আজীবন উহার যাবতীয় বদ গুনের পেছনে যে আপনারই জিনগত ত্রুটি কারণ তাহা অম্লান বদনে মানিয়া লইবেন। যেটুকু গুন উহাতে বর্তমান তাহার সব টুকুই যে সে তাহার মাতৃকূল হইতে উত্তরাধিকার সূত্রে পাইয়াছে, ইহা স্বীকার করিতে কোনরকম কার্পণ্য দেখাইবেন না।
#৬ স্ত্রী হঠাৎ কোন কিম্ভূত পোষাক পরিধান করিয়া আয়নার সম্মুখে দাঁড়াইয়া নিজেকে খুশি খুশি মুখে নিরীক্ষণ করিলে বুঝিতে হবে উনি নিজেকে পরমা সুন্দরী দেখিতেছেন। তাই কাল বিলম্ব না করিয়া সাথে সাথে জানাইয়া দিবেন যে তাঁহার এই নতুন রূপে আপনি এতটাই মোহিত যে দ্বিতীয় বার প্রেমে পড়িতে উদগ্রীব হইয়াছেন।
#৭ বিদেশী সঙ্গীতের সম্বন্ধে বিন্দু বিসর্গ না জানিয়াও যদি আপনার স্ত্রী আপনাকে ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীত অপেক্ষা উহার অধিক গুনাগুণ বোঝাইতে উদ্যত হন, তাহা হইলে চরম অজ্ঞতা প্রকাশের সাথে তাহার প্রতিটি বাক্যে সমর্থন জানাইয়া বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দেওয়াই বাঞ্ছনীয়।
#৮ আপনার পক্ক কেশের রঙ কেমন হইলে আপনাকে বেশি মানাইবে তাহা ওনার অধিক কেহ জানেন না। অতএব যাহা বলিবেন তাহা মানিয়া লওয়াই শ্রেয়। কারণ বাঁদর লইয়া পথে ঘাটে ওনাকেই ঘুরিতে হইবে (বিবাহোত্তর জীবনে স্ত্রীর অঙ্গুলি হেলনে স্বামী প্রবর যেই রূপ নাচ নাচিতে বাধ্য হন তাহাতে ওনার অবস্থা অনেকাংশেই বাঁদরের ন্যায় হইয়া যায়)।
#৯ আপনার স্ত্রী শয়ন কালে নাক ডাকিলে তাহাতে কোনরূপ ভ্রুকুঞ্চন দেখাইবার দুঃসাহস করিবেন না। সেক্ষেত্রে স্বাধীনতা হরণের দায়ে আপনি দণ্ডিত হইতে পারেন। ভুলিয়া যাইবেন না, গৃহ ওনার। আপনি আশ্রিত মাত্র।
#১০ সর্ব শেষ ও মোক্ষম বটিকাটি হইল যেই মুহূর্তে দেখিবেন আপনি বামাল সমেত ধরা পড়িয়া গিয়াছেন, তৎক্ষণাৎ ঠিক সেই সেই কার্যে মনোনিবেশ করিবেন যেই গুলির দ্বারা ওনার মন জয় করিতে পারিবেন (যেমন পরিচারিকা ছুটিতে থাকিলে বাসন মাজিয়া দেওয়া, বাচ্চা ছোট থাকিলে তাহার জামা-কাপড়-কাঁথা ধৌত করিয়া দেওয়া অথবা বাহির হইতে খাবার আনিয়া পাকশাল হইতে স্ত্রী কে নিষ্কৃতি প্রদান)।
বি দ্র: আমি নিশ্চিতরূপে অবগত যে, আমাদের চারিপাশে অনেক দাদা, ভাই, বন্ধুগণ এবং গুরুজনেরা এই প্রথায় দীর্ঘদিন সুখী দাম্পত্য জীবন অতিবাহিত করিতেছেন,,,!! তৎসত্বেও,, ইহাতেও যদি নিজেকে রক্ষা করিতে অপারগ হন, তবে আকস্মিক অসুস্থতার ভান করিয়া শয়নকক্ষে প্রস্থানই অপরিহার্য।
(সোশাল সাইট থেকে সংগৃহীত। লেখকের নাম জানা যায়নি। পাঠকের পড়ে ভাল লাগতে পারে, এই ভেবে প্রকাশ করা হল। )