একদিন না একদিন বোর্ড প্রেসিডেট হবেনই

সুমিত চক্রবর্তী

আজ না হোক কাল, সৌরভ গাঙ্গুলি বোর্ড সভাপতি হবেন। আমি কোনও জ্যোতিষী নই। ওই বুজরুকিতে বিশ্বাসীও নই। বোর্ড রাজনীতির খুঁটিনাটি বিষয় বুঝিও না। তবু কেন জানি না, মন বলছে, সৌরভ গাঙ্গুলি একদিন বোর্ডের শীর্ষে ঠিক আসবেন।
কার কখন সুযোগ এসে যায়, কীভাবে এসে যায়, কে বলতে পারে!‌ জগমোহন ডালমিয়া আবার বোর্ডের নিয়ন্ত্রকের জায়গায় চলে আসবেন, সেটাই বা কে ভেবেছিল!‌ এত তাড়াতাড়ি সৌরভ সিএবি–‌র সভাপতি হয়ে যাবেন, সেটাও অনেকে ভাবেননি। কী জানি, সৌরভ নিজেও হয়ত ভাবেননি।

sourav5
ক্রিকেট প্রশাসনে আসার আগ্রহটা সৌরভের মধ্যে অনেক আগে থেকেই ছিল। হঠাৎ করেই এসে গেল সুযোগটা। তিনি হয়ে গেলেন সিএবি সচিব। হঠাৎ, তাঁকে কেন সচিব করে আনলেন ডালমিয়া?‌ শুধুই স্নেহ করেন বলে?‌ শুধুই সৌরভের যোগ্যতাকে মর্যাদা দিতে?‌ আরও কারণ ছিল। কারণ, সিএবি–‌র দিকে হাত বাড়াচ্ছিল শাসক দল তৃণমূল। অনেকেই এখান থেকে, ওখান থেকে সিএবি–‌র প্রতিনিধি হয়ে এলেন। ডালমিয়ার পক্ষে এঁদের আটকানোর একটাই উপায় ছিল। সৌরভকে এগিয়ে দেওয়া। জানতেন, সৌরভকে সামনে রাখলে অন্য কেউ এগিয়ে আসবে না। ঠিক সেটাই হয়েছিল। সৌরভ সেক্রেটারি হচ্ছেন শুনে আর কেউ নমিনেশন দেওয়ার সাহস পেলেন না। কার্যত বিনা বাধায় সেক্রেটারি হয়ে গেলেন সৌরভ। জল্পনা ছিল, একসময় সৌরভের হাতেই সিএবি–‌র রাজ্যপাট ছেড়ে দেবেন। কিন্তু সেটা এত তাড়াতাড়ি হবে, অনেকেই ভাবেননি। ডালমিয়ার মৃত্যুর পর তাঁর উত্তরসূরী কে?‌ সৌরভের সবথেকে বড় প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন বিশ্বরূপ দে। কিন্তু নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে দিলেন, প্রেসিডেন্ট হবেন সৌরভ, সেক্রেটারি হবেন ডালমিয়া–‌পুত্র অভিষেক।
মমতার ভাইপোর নাম অভিষেক। ডালমিয়ার ছেলের নামও অভিষেক। দুজনেই বেশ তরুণ। দুজনেই সম্ভাব্য উত্তরসূরী। তৃণমূলের নাম্বার টু যদি ব্যানার্জি অভিষেক হয়ে থাকেন, তাহলে সিএবি–‌র নম্বর টু ডালমিয়া অভিষেক। অভিষেককে যেমন নিজের ইচ্ছেয় মমতা এম পি বানিয়ে দিলেন, এই অভিষেকের ক্ষেত্রেও অবশ্য মুখ্যমন্ত্রীই সেক্রেটারি বানিয়ে দিলেন। ব্যাস, মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করে দিয়েছেন। আর কার ঘাড়ে কটা মাথা?‌ বিশ্বরূপ দে বা আর কারও কারও যতই গোঁসা হোক, সিএবি–‌র নিয়ন্ত্রণ সৌরভের হাতেই। এবং ভোট হলেও সেটাই থাকবে। কারণ, সিএবি–‌র আভ্যন্তরীণ রাজনীতির সমীকরণটা সৌরভ বুঝে ফেলেছেন। সম্ভবত আয়ত্বও করে ফেলেছেন। যাঁরা প্রতিভাবান, তাঁরা সবকিছুই দ্রুত আয়ত্ব করে ফেলেন।
লোধা কমিটি নানা নিয়ম দেখাচ্ছে। সেখানে নাকি টানা ক্ষমতায় থাকা যায় না। থাকতে গেলে কুল অফ পিরিয়ডের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। সৌরভ কী করবেন, জানা নেই। শুধু এটুকু জানা আছে, এই বঙ্গসন্তান বোর্ডের সভাপতি হবেনই। এবং সেদিন আর দূরে নেই।

Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.