পিন্টু রজক
একটা ফাঁদ পেতেছে শিবসেনা। কী আশ্চর্য, সেই ফাঁদেই পা দিলেন অনেকে। বছর দুই আগের কথা। ধর্মতলায় গোরুর মাংস খেয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন কেউ কেউ। সেই তালিকায় বিকাশ ভট্টাচার্য যেমন ছিলেন, তেমনই ছিলেন কবি সুবোধ সরকার। ছিলেন মন্ত্রী রেজ্জাক মোল্লাও।
এই নিয়ে সোশাল মিডিয়ায় নানা চর্চা চলেছে গত ২ বছর ধরে। অনেকেই বলেছেন, হিন্দুরা তো গরু খেল, এবার মুসলিমকে শূকরের মাংস খাইয়ে দেখাক। সল্টলেকের করুণাময়ীতে এমনই ফাঁদ পেতেছিল পশ্চিমবঙ্গের শিবসেনা। তাঁরা শূকর মাংস খাওয়ার আয়োজন করেছিল। উদ্দেশ্যটা যে খুব মহৎ নয়, বলাই বাহুল্য। তারা দেখাতে চেয়েছিল, গরু খাওয়াকে ঘিরে আদিখ্যেতা হয়, কিন্তু শূকর খেতে বললে এড়িয়ে যায়। এ কেমন ধর্মনিরপেক্ষতা?
সুবোধ সরকার আপাতত মার্কিন মুলুকে। বিশ্ব বঙ্গ সম্মেলনে ব্যস্ত। বলতেই পারতেন, বাইরে আছি। যেতে পারছি না। তার বদলে তিনি বলে ফেললেন, শিবসেনার কাছে ধর্মনিরপেক্ষতার প্রমাণ দিতে যাব না। প্রমাণ দিতে হবে না। ভাল লাগল বিকাশ ভট্টাচার্যের প্রতিক্রিয়া। বেশ মজা করেই বলেছেন, ‘আমন্ত্রণ পেলে যেতেই পারি। শূকরের মাংস খেতে কোনও আপত্তি নেই। ফ্রিতে মাংস খাওয়ার এমন সুযোগ কেউ ছাড়ে নাকি?’
ফাঁদ পেতেছিল শিবসেনা। বিকাশবাবু উতরে গেলেন। সুবোধ সরকারের সামনেও উতরে যাওয়ার সুযোগ ছিল। কিন্তু গোঁয়ার্তুমিতেই ফেল করে গেলেন। এই ফাঁদটাই তো পেতেছিল শিবসেনা। সেই ফাঁদেই পা দিলেন।
খাওয়া একেকজনের ব্যক্তিগত বিষয়। কে কোনটা খাবে, সেটা একান্তই তার রুচির বিষয়। এটা নিয়ে কোনও বাহাদুরি না দেখানোই ভাল। সেদিন ধর্মতলায় প্রকাশ্যে গরু খাওয়াটাও হঠকারিতা। কোনও দরকার ছিল না এভাবে ধর্ম নিরপেক্ষতা দেখানোর। আর সেদিন যদি খেয়েইছেন, এদিন খেয়ে একটা প্রায়শ্চিত্ত করার সুযোগ ছিল। এই আমন্ত্রণ গ্রহণ করলে আরও গর্বের সঙ্গে বলা যেত, খাওয়া বা না খাওয়ার সঙ্গে ধর্মের কোনও সম্পর্ক নেই।