রজত সেনগুপ্ত
কয়েকদিন আগের কথা। হঠাৎ মেজাজ হারিয়ে ফেলেছিলেন ডালু বাবু। অর্থাৎ, আবু হাসেম খান চৌধুরি। গনি খানের এই বাইকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, আপনি কি তৃণমূলে যাচ্ছেন?
প্রায় তেড়ে গিয়েছিলেন সাংবাদিকের দিকে। গালাগালি। বলেছিলেন, আমাদের পরিবারের ঐতিহ্যের কথা জানেন? আপনারা অশিক্ষিত। এরকম প্রশ্ন করার সাহস পেলেন কোথা থাকে?
সেই ডালুবাবু সোজা হাজির হয়ে গেলেন নাকতলায়, পার্থ চ্যাটার্জির বাড়িতে। আপাতত বলছেন, নির্বাচনে মহাজোট নিয়ে আলোচনা করতে গিয়েছিলেন। আসলে, তৃণমূল শিবিরে এক পা বাড়িয়েই ছিলেন। আরও একধাপ এগিয়ে গেলেন।
লোকসভা ভোটে এই রাজ্যে তৃণমূলের সঙ্গে কংগ্রেসের জোট হবে কিনা, তা ঠিক করার ডালু বাবু কে? তাঁর মতামতের গুরুত্বই বা কতটুকু? জোট হলে সোনিয়া–রাহুলদের সঙ্গে মমতার কথা হবে। এমনকী অধীর চৌধুরি–আব্দুল মান্নানদের মতামতেরও গুরুত্ব নেই। সোনিয়া–রাহুল চাইলে হবে, নইলে হবে না, এই শেষ কথা। খুব জানতে ইচ্ছে করে, মহাজোট নিয়ে আলোচনা করার জন্য কে তাঁকে নাকতলায় পাঠিয়েছিলেন?
সুতরাং, ডালুবাবুর যাওয়া মোটেই জোট নিয়ে কথা বলতে নয়। দলবদলের অনেক ধাপ থাকে, এই যাওয়া তেমনই একটা ধাপ। পরিস্থিতি দলবদলের দিকেই গড়াচ্ছে। এবং বিরাট কিছু অঘটনা না ঘটলে মালদা দক্ষিণ কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী হিসেবেই হয়ত লড়বেন ডালু বাবু। পায়ের তলার মাটি যেভাবে আলগা হয়ে গেছে, কংগ্রেসের হয়ে জেতার কোনও সম্ভাবনাই নেই। অস্ত্বিত্ব বাঁচাতে তৃণমূলে যাওয়া ছাড়া উপায়ও নেই। তাহলে সেদিন ফোঁস করে উঠেছিলেন কেন? কদিন আগেও যে পারিবারিক ঐতিহ্যের কথা শুনিয়েছিলেন, এত তাড়াতাড়ি সেই ঐতিহ্য ভুলতে বসেছেন? এবার হয়ত বলবেন, উন্নয়নের কথা। হয়ত বলবেন, সাম্প্রদায়িক শক্তিকে আটকাতে গেলে তৃণমূলই ভরসা। আসল কথা হল, সিট বাঁচাতে হবে। যুক্তি আপনাআপনি তৈরি হয়ে যাবে।