ফেডারেল ফ্রন্ট বলে কিছু থাকবে না

রাতুল বিশ্বাস

গত কয়েকমাস ধরে একটা কথা খুব জোর শোনা যাচ্ছে— ফেডারেল ফ্রন্ট। যার অন্যতম কাণ্ডারি আমাদের মুখ্যমন্ত্রী। এর আগে তৃতীয় ফ্রন্টের নামে নানা প্রচার হয়েছে। প্রতিবারই লোকসভা ভোটের আগে এই শব্দ দুটো জন্ম নেয়। অর্থাৎ, এই দলগুলো না কংগ্রেসের সঙ্গে, না বিজেপি–‌র সঙ্গে।

ভোট পেরোলেই দেখা যায়, যারা সরকার গড়ার ব্যাপারে এগিয়ে থাকে, তাদের দিকে একে একে ঢলে পড়ে। এবারও ঠিক তাই হবে। যাদের নিয়ে ফেডারেল ফ্রন্ট হচ্ছে, তাদের কারও কোনও বিশ্বাসযোগ্যতা আছে!‌ দিল্লিতে চার মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠক হয়ে গেল। একে একে তাদের নিয়ে আলোচনা করা যাক। কুমারস্বামী। কংগ্রেসের সমর্থনে তাঁর সরকার। কংগ্রেস যদি সরকার গড়ার জায়গায় থাকে, তিনি কী করবেন?‌ নিজের রাজ্যের সরকার বাঁচাতে তাঁকে কংগ্রেসের দিকেই যেতে হবে। এমনকী আসন সমঝোতাও করতে হবে।
চন্দ্রবাবু নাইডু। কদিন আগেও এনডিএ–‌তে ছিলেন। এখন দরাদরিতে পোষাচ্ছে না। তাই আপাতত বিদ্রোহী। সুযোগ এলেই আবার এন ডি এ শিবিরে ভিড়বেন। এমনকী কংগ্রেস সরকার গড়ার কাছাকাছি থাকলে সেদিকেও ভিড়তে পারেন।

federal front
পিনারাই বিজয়ন। তাঁর পক্ষে বিজেপির দিকে যাওয়া মুশকিল। কিন্তু কংগ্রেস সরকার গড়ার জায়গায় থাকলে বাইরে থেকে সমর্থন দেওয়ার জন্য তৈরি থাকতে হবে।
মমতা ব্যানার্জি। অতীতে বিজেপির সঙ্গে ছিলেন। ছেড়ে কংগ্রেসের দিকে এসেছিলেন। ফের বিজেপি–‌তে ভিড়েছিলেন। পরে আবার কংগ্রেস। পরে একলা চলো। এটাই তাঁর প্রধানমন্ত্রী হওয়ার শেষ সুযোগ। যদি কংগ্রেসের আসন একশোর নিচে থাকে, তাহলেই তাঁর সুবিধা। বাকি আঞ্চলিক দলগুলির আসন দেড়শো পেরিয়ে গেলে কংগ্রেসকে চাপে রাখার খেলা খেলতে পারেন। বলতেই পারেন, কংগ্রেস বাইরে থেকে সমর্থন করুক। কিন্তু কংগ্রেস যদি ১২০ ছাপিয়ে যায়, তাহলে ফেডারেল ফ্রন্ট বলে কিছু থাকবে না। একে একে বাকিরা ঝুঁকবে কং শিবিরে। তখন তাঁকেও ভিড়তে হবে।
সুতরাং, যতই ফেডারেল ফ্রন্টের দামামা বাজানো হোক, ভোটের পর এসব খুঁজে পাওয়া যাবে না। হয় বিজেপি নয় কংগ্রেস, কোনও এক বন্দরে নৌকো ভেড়াতেই হবে।

Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.