সেলাম চ্যাটার্জি দম্পতি, সরকার বা ফেডারেশন পাশে দাঁড়াতে পারে না!‌

অমিত ভট্টাচার্য

কলকাতার চ্যাটার্জি দম্পতির কথা পড়লাম। বেঙ্গল টাইমসে প্রকাশিত হওয়ার পরেই বেশ কয়েকটি কাগজ ও পোর্টালে দেখলাম। সঠিক সময়ে সঠিক জায়গায় আলো ফেলার জন্য বেঙ্গল টাইমসকে ধন্যবাদ। সেই লেখার পরিপ্রেক্ষিতেই আমি কতগুলি কথা বলতে চাই। ওপেন ফোরামে নিজের মতামত পাঠালাম।

এই দম্পতির কথা যত ভাবছি, ততই অবাক হচ্ছি। সারা বছর ধরে তাঁরা টাকা জোগাচ্ছেন বিশ্বকাপ দেখবেন বলে। এভাবেই ৯ খানা বিশ্বকাপ দেখে ফেললেন। ১৯৮২ তে যে দৌড় শুরু হয়েছিল, তা আজও থামেনি। ঘরকুনো বলে বাঙালির দুর্নাম আছে। কিন্তু এই দম্পতিকে দেখে কে বলবে, বাঙালি ঘরকুনো। ছিয়াশি বছর বয়সেও কিনা তাঁরা রাশিয়া যাচ্ছেন!‌ আমাদের পরিবারের অভিভাবকরা একা একা একটু বাজারে গেলে আমরা কত চিন্তিত হয়ে পড়ি। যতক্ষণ না ফিরে আসেন, ততক্ষণ আমাদের দুশ্চিন্তা থাকে। ফিরে আসার পর কত বকাবকি করি। অথচ, এঁদের দেখুন। একজন ছিয়াশি। অন্যজন আশির দোরগোড়ায়। অথচ, তাঁরা কিনা চললেন বিশ্বকাপ দেখতে।

pannalal1

এমন নয় যে তাঁদের প্রচুর অর্থ। বৃদ্ধের সামান্য পেনশনটুকুই ভরসা। মাসে মাত্র এগারো হাজার। সেখান থেকে এক দু হাজার করে সরিয়ে রাখা। চার বছর পর বিশ্বকাপ দেখবেন, সেই আশায়। ১৯৮২ থেকে এভাবেই চলছে। বাংলায় তো দূরের কথা, সারা দেশে এমন দৃষ্টান্ত আছে!‌

আমার প্রশ্ন অন্য জায়গায়। সরকার এত এত খেলরত্ন দিচ্ছে। যারা কোনও খেলাধূলাই করে না, এমন হাজার হাজার ক্লাবকে লাখ লাখ টাকা অনুদান দিচ্ছে। এই বৃদ্ধ দম্পতির পাশে সরকার দাঁড়াতে পারে না?‌ তাঁদের বাজেট তো অতি অল্প। সাহায্য হিসেবে কিছু টাকা কি রাজ্য সরকার দিতে পারত না?‌ বিশেষ করে যাঁরা ৩৬ বছর ধরে নিজেদের টাকায় বিশ্বকাপে যাচ্ছেন (‌হয়ত এটাই শেষ যাত্রা), তাঁদের এই অভিযানে পাশে থাকাটা অনেক বেশি মানবিক দৃষ্টান্ত হত।

অবাক হয়ে যাই আমাদের দেশের ফুটবল ফেডারেশনকে দেখেও। কোটি কোটি টাকা অনুদান কী কাজে খরচ হচ্ছে, কেউ জানে না। তারাই কি পারত না তিন–‌চার লাখ টাকা সাহায্য করতে!‌ মনে রাখবেন, বিশ্বকাপের আসরে তাঁরাও কিন্তু ভারতীয় ফুটবলের মুখ। এমন উন্মাদনা আর কজন দেখাতে পারেন!‌ জানি না, এই লেখার কোনও ফল হবে কিনা। জানি না, সরকার বা ফেডারেশনের টনক নড়বে কিনা। তবু বেঙ্গল টাইমস মারফত রাজ্য সরকার ও আমাদের দেশের ফুটবল ফেডারেশনের কাছে এই আবেদন জানিয়ে রাখলাম।

(‌এমন নানা পরামর্শ বা দাবি উঠে আসে বেঙ্গল টাইমসের পাতায়। আপনিও এমন কোনও পরামর্শ বা দাবির কথা লিখে পাঠাতে পারেন। বিভিন্ন দপ্তরের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারেন। আমরা সেই লেখা প্রকাশ করে, সংশ্লিষ্ট জায়গায় তার লিঙ্ক পাঠিয়ে দেব।)‌

bengaltimes.in@gmail.com‌

 

বেঙ্গল টাইমসে প্রকাশিত আগের লেখার লিঙ্ক:

https://www.bengaltimes.in/21359-2/

Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.